৭৮ শতাংশ কানাডীয় মনে করেন মুসলমানদেরকে কানাডার আচার-প্রথা ও মূল্যবোধ গ্রহণ করতে হবে
তবে তারা তাদের নিজ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতি মেনে চলতে পারে
ডিসেম্বর ১, ২০১৭
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক: এক সমীক্ষায় দেখা গেছে মুসলমানদের ব্যাপারে কানাডীয়দের মনোভাব সাধারণভাবে ইতিবাচক, তবে তা ধর্মীয় নেতৃত্ব ও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
থিঙ্ক ফর অ্যাকশন অ্যান্ড ইনসাইটস ম্যাটার নামের একটি গ্রুপের পক্ষ থেকে ওই সমীক্ষা চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে দেখা যায় ৭৮ শতাংশ কানাডীয় একমত যে মুসলমানদেরকে কানাডার আচার-প্রথা ও মূল্যবোধ গ্রহণ করতে হবে তবে তারা তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতি মেনে চলতে পারে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় ৮৮ শতাংশ বলেন, মুসলমানদের অন্য কোনও কানাডীয়র চেয়ে ভিন্নভাবে দেখা উচিৎ নয়।
কিন্তু ৭২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন, কানাডায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ও ভীতির পরিবেশ জোরালো হয়েছে এবং তা আরও প্রকট হবে।
১৩ মার্চ থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে পরিচালিত সমীক্ষার ফলাফল গত শনিবার ক্যালগেরিতে ‘ইসলামভীতি, বৈষম্য ও পদ্ধতিগত বর্ণবাদ’ শীর্ষক ঐক্য সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়। খবর দি কানাডিয়ান প্রেস এর।
সমীক্ষার আয়োজনকারী গ্রুপটির চেয়ারম্যান মুকাররম জাইদী বলেন, “সমীক্ষার সবচেয়ে বড় উদ্ঘাটন হলো সেইসব কানাডীয় যারা কোনও মুসলমানের বন্ধু কিংবা কোনও মুসলিম ব্যক্তির সঙ্গে জানাশোনা রয়েছে। কারণ এধরণের কানাডীয়দের ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে এবং তাদের কাছে মুসলমানদের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।
“শঙ্কা হলো সবচেয়ে বড় ব্যাপার। বেশিরভাগ কানাডীয় মনে করেন যে, বর্ণবাদের বিষয়টি বেড়ে গেছে। তারা সাধারণ বর্ণবাদ এবং বিদ্বেষমূলক অপরাধ (যধঃব পৎরসবং), ধর্মীয় কারণে বৈষম্য, সমকামিতার ভীতি এবং ইহুদিবাদ-বিরোধিতার বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন।”
জনগণের ধারণা সবটাই ইতিবাচক নয়। সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে, ৫৬ শতাংশ কানাডীয় মনে করে, ইসলাম নারীর অধিকার খর্ব করে। ইমামদের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৫৪ শতাংশ কানাডীয়র এবং মুসলিম নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানান ৩৫ শতাংশ কানাডীয়।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইসলাম (Muslims Against Terrorism) এবং কানাডার ইসলামিক সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা এবং ক্যালগেরির ইমাম সাঈদ সোহরাওয়ার্দী মুসলিম নেতৃত্বের প্রতি কানাডীয়দের সন্দেহের বিষয়টি অনুধাবন করেন। তিনি বলেন, ইমামদের যখন ধর্মোন্মাদনা, চরমপন্থা ও সহিষ্ণুতা নিয়ে কথা বলা উচিৎ তখন বেশিরভাগ ইমাম কেবল ধর্মীয় শিক্ষা ও নৈতিকতা নিয়ে কথা বলেন।
সোহরাওয়ার্দী বলেন, “অনেক মুসলিম নেতা আইএসআইএল, তালেবান, আল-কায়েদার নিন্দা করেন না। বহু ইমাম এটা করেন কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।”
পাকিস্তানে জন্মগ্রহণকারী সোহরাওয়ার্দী বলেন, ইমামদেরকে ইংরেজি বা ফরাসী ভাষায় অনর্গল কথা বলতে জানতে হবে এবং কানাডার সমাজ সম্পর্কে তাদের সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, কানাডার বাইরে থেকে আসা বেশিরভাগ বিদেশি ইমাম এখনও কুয়োর ব্যাং-এর মতো। তারা এখনও লোকেদের কানাডার সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার কাজে সহায়ক নন।”