কুইবেক সিটিতে মুসলিম হত্যাযজ্ঞের এক বছর পূর্তি
ফেব্র্রুয়ারি ১০, ২০১৮
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ইসলামিক কালচারাল সেন্টার অব কুইবেক এর মসজিদে যে বর্বরোচিত হত্যাকন্ড ঘটেছিল তার এক বছর পূর্তি হলো গত ২৯ জানুয়ারী। ২০১৭ সালের ২৯ জানুয়ারী ইসলামিক কালচারাল সেন্টার অব কুইবেকে মাগরিব নামাজ আদায়কালে আলেকজান্ডার বিসোনেট নামের এক যুবক অতর্কিতে স্বয়ংক্রিয় বন্দুক হামলা চালায়। বন্দুক হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ৬ জন মুসল্ল্লি। হামলার ঘটনায় আহত হন আরো ১৯ জন।
হামলায় সেদিন যারা নিহত হন তাদের মধ্যে আছেন অধ্যাপক খালেদ বেলকাসেমি, আজেদ্দিন সুফিয়ান, আব্দেল করিম হাসান, আবু বকর থাবতি, মামাদু তানৌ ব্যারি ও ইব্রাহিম ব্যারি।
নিহতদের স্মরণে গত ২৯ জানুয়ারী কুইবেক সিটিতে সমাবেশ ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক হাজার লোক যোগ দেন। যোগ দেন
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, কুইবেকের প্রিমিয়ার ফিলিপ কুইয়ার্ড, মন্ট্রিয়ল সিটির মেয়র ভেলিয়ারী প্লান্ট, কুইবেক সিটির মেয়র রিজিস লেবুমি সহ আরো অনেক বিশিষ্টজন।
সমাবেশে বক্তাগণ অনেকেই নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকারদের কথা স্মরণ করে অশ্র“সজল হয়ে উঠেন, তবে কেউ কেউ বর্ণবাদ ও বিদ্বেষ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ও প্রতিবাদী হয়ে উঠার আহ্বান জানান।
সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কুইবেক ও কানাডার জনগণের প্রতি ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান এবং ভয় ও কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেন।
কুইবেকের প্রিমিয়ার ফিলিপ কুইয়ার্ড উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তার অগ্নিঝরা বক্তৃতায় প্রশ্ন তুলে বলেন, “কয়েক জেনারেশন ধরে বসবাসরত কুইবেকের কিছু অধিবাসী কেন নিজেদেরকে উচ্চতর বা শ্রেষ্ঠতর মানুষ মনে করেন সাম্প্রতিক সময়ে আসা ইমিগ্রেন্টদের তুলনায়? আমরা সবাই কানাডায় এসেছি এখানকার আদিবাসীদের সঙ্গে যোগ দিতে। কেউ আগে এসেছি, কেউ পরে এসেছি। এটাই শুধু পার্থক্য।”
ফিলিপ কুইয়ার্ডের এই বক্তব্যকে তুমুল করতালি দিয়ে স্বাগত জানান জনতা।
ফিলিপ কুইয়ার্ড আরো বলেন, “আমরা দশ জেনারেশন আগে এসেছি বলে যারা ৫ বছর আগে কানাডায় এসেছেন তাদের তুলনায় শ্রেষ্ঠ হয়ে যাইনি।”
সমাবেশে মন্ট্রিয়ল ও কুইবেক সিটির মেয়র এবং হামলায় নিহতদের স্ত্রীদের কয়েজন বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মসজিদে গুলি চালনার ঘটনার সময় অন্যদের বাঁচোনোর চেষ্টা করতে গিয়ে ৭ টি গুলিতে আহত হয়ে পক্ষাঘাতগ্রস্তহয়ে পড়া আইমান দারবালি।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার পর আইমান দারবালি রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে কোনও রকম সাড়া পাননি। কিন্তু তার সহায়তায় এগিয়ে আসেন বন্ধুরা। তারা আইমান দারবালির পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লক্ষ ডলার অনুদান সংগ্রহ করেন তার পক্ষে।
সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন প্রধানন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, কুইবেক প্রিমিয়ার ফিলিপ কুইয়ার্ড, মন্ট্রিয়ল ও কুইবেক সিটির মেয়রদ্বয় যেটি কুইবেক সিটির মসজিদে গিয়ে শেষ হয়। এই সময়ে মসজিদের গেটে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে একটি করে সাদা গোলাপ অর্পন করেন।