কানাডিয়ান টায়ারে এক মুসলিম নারীর সন্ত্রাসী হামলা
আদলতে অভিযুক্ত নারীর উদ্ধত ও জঙ্গীবাদী হুমকী : ‘আপনারা যদি আমাকে মুক্তি দেন তাহলে আমি আবারও এবং বারবার একই কাজ করবো।’
আগস্ট ৫, ২০১৭
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডিয়ান টায়ারের এক কর্মচারী ও ক্রেতাদের ওপর গলফ স্টিক ও ছুরি ঘোরানোর দায়ে অভিযুক্ত এক নারীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে আরসিএমপি।
হামলার সময় সেই নারী দায়েশ বা আইএসের প্রতি অনুগত্যের অঙ্গীকার করেছিলেন। আরসিএমপির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। খবর টরন্টো স্টার।
রিহাব দামেশ (৩২) নামের ওই সিরীয়-কানাডীয় নারী দুই শিশু সন্তানের মা। গত মঙ্গলবার আরসিএমপি তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী ধারায় ১৪টি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে বলা হয়, দামেশের কর্মকান্ড ছিলো “একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের নির্দেশে, তাদের পক্ষে এবং তাদের সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যেই পরিচালিত”।
অভিযোগের মধ্যে হত্যাচেষ্টার চারটি, অস্ত্র নিয়ে হামলার চারটি, বিপজ্জনক অস্ত্র বহনের তিনটি এবং কোনও গোপন অস্ত্র বহনের দুটি পুরনো অভিযোগও রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নতুন যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে সেটা হলো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগদানের জন্য কানাডা ছেড়ে যাওয়া।
কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রাউন প্রসিকিউটর হাওয়ার্ড পিয়াফস্কির তথ্য অনুযায়ী, রিহাব দামেশ ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল সিরিয়ায় যাবার জন্য কানাডা ত্যাগ করেন, কিন্তু তুরস্কে তাকে বাধা দেয়া হয় এবং সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয়।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দামেশ তার প্রায় সাত বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টেনে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান। আদালতের নথি অনুযায়ী, দামেশ ২০০৮ সালের নভেম্বরে আনাস হানাফিকে বিয়ে করেন এবং ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তার সঙ্গে কানাডায় বসবাস করতে থাকেন। এর একমাস পর তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।
২০১৭ সালের মে মাসে হানাফি তালাকের জন্য আবেদন করেন।
দামেশ এমনও দাবি করেন যে, কানাডার বিচার ব্যবস্থার ওপর তার কোনও আস্থা নেই। তিনি গত ২৬ জুন আদালতে হাজিরার সময় একজন অনুবাদকের সাহায্য নিয়ে বলেন, “আমি মানুষের তৈরি যে কোনও আইনের নিন্দা জানাই। আমি শুধু আল্লাহর সৃষ্ট ঐশ্বরিক আইনে আস্থা রাখি। আমি চাই আল্লাহর বাণীই হবে সর্বোচ্চ আইন।”
দামেশ তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বিচারকের বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও কোনও আইনী উপদেষ্টার সহায়তা নিতে অস্বীকৃতি জানান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করেই বিচারক তাকে আইনী উপদেষ্টার সহায়তা নেয়ার অনুরোধ করেন।
কিন্তু দামেশ বলেন, “আমি এদেশের সব আইনজীবীর সহায়তা প্রত্যাখ্যান করছি। আমি কানাডার নাগরিকত্বও বর্জন করতে চাই। আমি আপনাদের প্রতি কোনওরকম আনুগত্য রাখতে চাই না।
“আপনারা যদি আমাকে মুক্তি দেন তাহলে আমি আবারও এবং বারবার একই কাজ করবো।”
পুলিশ সূত্র স্টার পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছে যে, গত ৩ রা জুন কানাডীয় বিপনীতে সংঘটিত ঘটনার সময় দামেশ তার মাথায় দায়েশ-এর চিহ্ন আঁকা মস্তকাবরণী পরে ছিলেন এবং দোকানের ভেতরেই তিনি ওই সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় দোকানের একজন কর্মচারী প্রাণঘাতী নয় এমন জখম হন। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় দামেশ একজন কর্মচারী ও একজন ক্রেতার ওপর একটি গলফ স্টিক ঘুরিয়ে হুমকি সৃষ্টি করেন এবং মৌখিকভাবেও তাদের হুমকি দিতে শুরু করেন। এরপরই তাকে থামানো হয়। পুলিশ অভিযোগ করে যে, এরপর ওই নারী তার পোশাকের ভেতরে লুকানো একটি বড় ছুরি বের করেন, তবে দোকানের কর্মচারী ও ক্রেতারা তার হাত থেকে ছুরিটি কেড়ে নিতে সক্ষম হন।