পিয়ে ট্রুডোকে দেয়া ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ হস্তান্তর

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে অ্যালিওট ট্রুডোকে মরণোত্তর ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার মন্ট্রিয়েলে হায়াত রিজেন্সি হোটেলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে ও কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ হস্তান্তর করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন ও এতে বিশেষ অবদান রাখায় কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোকে বাংলাদেশ সরকার এই সম্মাননা প্রদান করে।
এ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও অটোয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক সাংবাদিকদের জানান, সম্মাননা প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে কয়েকজন বিশ্বনেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন পিয়েরে ট্রুডো তার মধ্যে অন্যতম। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কয়েকটি দেশ প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় তার মধ্যে কানাডা অন্যতম। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পিয়েরে ট্রুডো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের পক্ষে দৃঢ়ভাবে কথা বলেছেন। পিয়েরে ট্রুডো কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যলাভের জন্যও খোলাখুলিভাবে সমর্থন দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, পিয়েরে ট্রুডোর পুত্র ও কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আমরা উভয়ে সেকেন্ড জেনারেশন। আপনার পিতা ও আমার পিতা উভয়েই প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জানান, সম্মাননা প্রদানকালে উভয় প্রধানমন্ত্রীর পিতার বন্ধুত্বের সম্পর্ককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে প্রধানমন্ত্রী তার কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা এবং বন্ধু রাষ্ট্র কানাডার উন্নয়ন-সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করছি। শেখ হাসিনা কানাডার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং শিগগিরই তিনি বাংলাদেশে আসবেন বলেও জানান।
শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ার স্তম্ভ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার স্তম্ভ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী ম্যারেই ক্লদি বিবেউ। কানাডার এই মন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় তার (শেখ হাসিনা) উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।
শুক্রবার এখানে ফিফথ গ্লোবাল ফান্ড রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্সে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য প্রদানে আহ্বানের সময় ম্যারেই ক্লদি বিবেউ শেখ হাসিনা সম্পর্কে এমন প্রশংসা করেন।
কানাডীয় মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মতো কিছু নেই, যিনি ‘নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার স্তম্ভ’।-সূত্র : যুগান্তর