কানাডায় অধিকমাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠছে রক্ষণশীল নব্য জাতিয়তাবাদীদের কার্যকলাপ

টার্গেট সংখ্যালঘু ইমিগ্রেন্ট সম্প্রদায় : মূল টার্গেট মুসলিম ইমিগ্রেন্ট

ফেব্রুয়ারী ১০, ২০১৭

প্রবাসী কণ্ঠ : কানাডায় রক্ষণশীলদের কয়েকটি গ্রুপ সাম্প্রতিক সময়ে অধিকমাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে ইমিগ্রেন্ট বিরোধী একটি অনুভূতি বা চেতনা জাগ্রত করতে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের চলে আসা, গোটা ইউরোপে ইমিগ্রেন্ট বিরোধী প্রবণতা এবং এর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভাবনীয় সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেছেন এই রক্ষণশীল গোষ্ঠির এই সদস্যরা। এই রক্ষণশীলদের মধ্যে নব্য জাতিয়তাবাদের একটি চেতনা নতুনভাবে জাগ্রত হয়ে উঠেছে এখন। কানাডার মাল্টিকালচারালইম নীতিতে তারা বিশ্বাসী নন।

এরকম একটি গোষ্ঠির নাম La Meute ইংরেজীতে যেটাকে The Wolf Pack বলা হয়। এর বাংলা অর্থ দাড়ায় নেকড়ের দল। www.vice.com  এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে। প্রতিষ্ঠাতা এরিক ভেন এবং পেট্রিক বেউড্রি। এই দুইজন কানাডীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তারা বলেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো কানাডায় ইসলামী মৌলবাদ ও শরীয়া আইনের বিরুদ্ধে লোকজনকে দাড় করানো। কিন্তু তারা কি ভাবে এই কাজটি করবেন তা স্পষ্ট নয়। এই La Meute গ্রুপের সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় প্রধানত ফেসবুকে।

(বাঁ থেকে) প্যাট্রিক বিওড্রাই ও এরিক কুরভাস খধ গবঁঃব প্রতিষ্ঠা করেন। প্রচারণার দায়িত্বে আছেন সুলভেন (ডানে)। ছবি :সিবিসি

গত বছর কানাডার কুইবেক প্রভিন্সে যখন xenophobic  (বিদেশীদের সম্পর্কে অহেতুক ভীতি রয়েছে যাদের) গ্রুপের সদস্যরা তাদের পরিকল্পিত ইমিগ্রেন্ট বিরোধী আদর্শের শিকড় প্রবেশ করাতে থাকে সমাজের গভিরে তখন এই La Meute গ্রুপের সদস্যদের বাকপটুতাপূর্ণ এবং ভয়প্রদর্শনকারী কর্মকান্ডের কারণে তারা কুইবেকের কট্টর জাতীয়তাবাদীদের নজরে আসতে থাকে। তবে কুইবেকে অন্যান্য মুসলিম বিরোধী গ্রুপ (PEGIDA Quebec, Soldiers of Odin etc.) যেমন করে কুইবেকের রাজপথে নেমে এসেছে তাদের মুসলিম বিরোধী কার্যক্রম তুলে ধরতে, La Meute সেই অর্থে এখনো রাজপথে সক্রিয় হয়ে উঠেনি।

সিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডায় ইসলামী মৌলবাদ বিকাশের ব্যাপারে La Meute এর সদস্যরা আতংকিত। ফেসবুকে তাদের সদস্যের সংখ্যা এখন ৪৩ হাজারেরও বেশী। কুইবেকে তাদের উপস্থিতি ও তাদের রক্ষণশীল অভিব্যক্তি এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। ফেসবুকে তারা যে সকল তথ্য ও পোস্ট আদানপ্রদান করছেন তার মধ্যে আছে হালাল পণ্য বর্জন করার আহ্বান, সরকারের মাল্টিকালচারালইজ পলিসির বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিল করা, কুইবেকে ইসলামী ব্রাদারহুডের প্রভাব সম্পর্কে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া ইত্যাদি। তারা এখন তাদের অনলাইনের জনপ্রিয়তাকে রাজনৈতিক ভাবে কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনাও করছেন। অথবা ইসলামী মৌলবাদের বিরুদ্ধে লবিস্ট গ্রুপ হিসাবে প্রভাব বিস্তার করা যায় কিনা তা নিয়েও চিন্তা ভাবনা করছেন।

La Meute এর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এরিক ভেন বলেন, আমি চাই না ইসলামী শরিয়া আইনের অধিবে বাস করতে। আমি চাই না সর্বগ্রাসী ইসলামী শাসনের অধিনে বাস করতে। এরিক ভেন আফগান ফেরত একজন কানাডীয় সৈনিক।

কুইবেকে আরো প্রায় ডজনখানেক এন্টি ইসলামী গ্রুপ বা ব্লগের মত La Meute সাম্প্রতিক সময়ে তৎপড় হয়ে উঠেছে অনলাইনে। La Meute এর তরঙ্গায়িত হওয়ার মাত্রাটা যেন একটু বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রথম দিকে এই গ্রুপের সদস্যরা ফেসবুকে গোপনে সংগঠিত হচ্ছিলেন। কয়েক মাস আগে তারা কুইবেকে প্রচারপত্র বিলি করেন। গত বছর আগস্ট মাসে কুইবেক সিটির নিকটে সিরিয়ান রিফিউজিদের নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এরা উপস্থিত হয়ে মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেন এবং চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘ Think about your choices, and above all, the security of the nation.’

La Meute এর প্রতিষ্ঠাতাগণ মনে করেন কুইবেক হলো উত্তর আমেরিকায় ইউরোপীয় সভ্যতার প্রধান কেন্দ্রস্থল। কিন্তু সেই কুইবেক এখন ইউরোপীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাস থেকে সংযোগহীন হয়ে গেছে। আর এ কারণেই এখানে ইসলামী মৌলবাদ তার কালো হাত প্রসারের সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। কুইবেকের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল Parti Québécois ও Coalition Avenir Québec  ইমিগ্রেশন ইস্যু এবং কুইবেকের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার ইস্যুতে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। কিন্তু এই বিষয়ে নীতি ও আদর্শের মিল থাকলেও La Meute এই দুই দলের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে কোন কর্মসূচি দিচ্ছে না। কারণ রাজনৈতিক দল বা দলের নেতৃত্বের প্রতি তাদের তেমন আস্থা নেই।

কুইবেকে মহিলা ও সমকামীরা যাতে ইসলামী মৌলবাদীদের কারণে হুমকীর সন্মুখীন না হন সে ব্যাপারেও উদ্বিগ্ন La Meute ।

কুইবেকে রক্ষণশীল এই  La Meute এর বিস্তার এতটা দ্রুততার সঙ্গে ঘটে যে এ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের সমমনা লোকেরা এর নাম ও এর সাংগঠনিক কাঠামো ধার করে সেখানেও অনুরূপ সংগঠন খুলে বসেন।

এদিকে কুইবেকের La Meute এর পাশাপাশি Soldiers of Odin নামের আরেকটি রক্ষণশীল সংগঠন তৎপর হয়ে উঠেছে যাদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী বিদ্বেষ ছড়ানো ও বিশৃংখলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে এরা এন্টি ইমিগ্রেন্ট ও এন্টি মুসলিম ভাবধারায় বিশ্বাসী। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিম এর পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে এই Soldiers of Odin নামের সংগঠনটি সমস্যা সৃষ্টি কারী। টরন্টোর নিকটবর্তী হ্যামিলটনের সিটি কাউন্সিলর ম্যাথিও গ্রিন অভিযোগ করেন এরা বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।

Soldiers of Odin এর উৎপত্তি ফিনল্যান্ডে। কিন্তু এর বিস্তৃতি ঘটতে সময় লাগেনি। ২০১৫ সালে শুরু হলেও বর্তমানে কানাডাসহ ২০ টি দেশে এদের অঙ্গ সংগঠন রয়েছে।Soldiers of Odin এর মূল প্রতিষ্ঠাতা হলেন ফিনল্যান্ডের অধিবাসী মাইক রেনটা যিনি ২০১৫ সালে আদালতে অভিযুক্ত হয়েছিলেন একজনকে মারপিট করার জন্য।

কানাডায় Soldiers of Odin এর সদস্য সংখ্যা রয়েছে বর্তমানে প্রায় ৩৫০০। কুইবেকে Soldiers of Odin এর স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ক্যাটি লাটুলিপির ভাষ্য হলো, মুসলিমদেরকে ভয় দেখানো নয়, তাদেরকে কুইবেক এর ভ্যালুউজ সম্পর্কে সচেতন করাই আমাদের কাজ। আমরা তাদেরকে এখানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা আমদানী করতে দেব না।

Soldiers of Odin এর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদেরকে ভয় পাবার কিছু নেই। কানাডায় এই সংগঠনটির জাতীয় প্রেসিডেন্ট জোল এ্যাঙ্গগোট বলেন, অনেকেই মনে করেন আমরা হোয়াইট সুপ্রিমেসী গ্রুপের লোক। কথাটি সত্য নয়। আমাদের সংগঠনে কতিপয় লোক ছিলেন যারা হোয়াইট সুপ্রিমেসীতে বিশ্বাসী। কিন্তু আমরা ইতিমধ্যেই সংগঠন থেকে তাদেরকে বহিস্কার করেছি। Soldiers of Odin ইমিগ্রেন্ট বিরোধী অথবা মুসলিম ইমিগ্রেন্ট বিরোধী এ জাতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেন জোল এ্যাঙ্গগোট।

কিন্তু Soldiers of Odin এর বক্তব্য অনেকেই বিশ্বাস করেন না। কারণ তাদের সংগঠনের উপবিধিতেই দেখা গেছে, সরকার কর্তৃক মুসলিম দেশ থেকে ইমিগ্রেন্ট গ্রহণ করায় তারা বেজায় অখুশী। হ্যামিলটনের সিটি কাউন্সিলর ম্যাথিও গ্রিন বলেন, এই গ্রুপটি এন্টি মুসলিম বা এন্টি ইমিগ্রেন্ট সেন্টিমেন্ট এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

রয়টার্স এর এক প্রতিবেদনেও বলা হয় Soldiers of Odin এর ওয়েবসাইটে একসময় এরকম বক্তব্য লেখা ছিল যাতে বলা হয়, ইসলামিস্ট অনুপ্রবেশকারীরা এ দেশে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করছে এবং তাদের কারণে অপরাধের মাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ‘মাইগ্রেন্টস নট ওয়েলকাম’ লেখা  প্লেকার্ডেও দেখা গেছে মিছিলে।

আমেরিকার এন্টি ডিফেমেশন লীগ এর বার্ষিক প্রতিবেদনেও বলা হয়, হোয়াইট সুপ্রিমেসী গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে এই Soldiers of Odin এর সম্পর্ক রয়েছে।

Soldiers of Odin এর নীতিমালায় লেখা আছে তারা বর্ণবাদে বিশ্বাসী নয় এবং কোন ধর্মের প্রতি তাদের বিদ্বেষ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তাদের অফিসিয়াল বক্তব্যের সঙ্গে সদস্যদের বিশ্বাসের কোন সাযুজ্য বা মিল নেই। তারা মুখে বলে এক কথা, কাজে করে তার উল্টোটি। তাদের অধিকাংশই হোয়াইট সুপ্রিমেসীর সমর্থক। অনেকে Soldiers of Odin এর সঙ্গে জড়িয়েছে বিভিন্ন চরমপন্থী গ্রুপ থেকে এসে।

কানাডায় রক্ষণশীল মনভাবাপন্ন লোকেরা যে মুসলিম ইমিগ্রেন্টদের সুনজরে দেখেন না সে বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন গত ডিসেম্বরে (২০১৬) প্রকাশ করে ফোরাম রিসার্স নামের একটি জরীপ প্রতিষ্ঠান। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলিম ইমিগ্রেন্টদেরকে সুনজরে দেখেন রক্ষণশীল কানাডিয়ানদের সিংহভাগ। আরো যাদেরকে সুনজরে দেখা হয় না তাদের মধ্যে আছেন – রেড ইন্ডিয়ান, সাউথ এশিয়ান, এশিয়ান, ইহুদী এবং কৃষ্ণাঙ্গ ইমিগ্রেন্টরা।

জরীপে দেখা গেছে কুইবেক প্রভিন্সে শতকরা ৫৭ জন কোন না কোন এথনিক গ্রুপকে সুনজরে দেখেন না। আলবার্টায় এই হার ৪৫%, আটলান্টিক কানাডায় ৩৯%, ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় ৩৫% এবং অন্টারিও, মেনিটোবা আর সাচকাচুয়ানে ৩৩%।

কানাডায় সবচেয়ে বেশী অপ্রসন্নতা লক্ষ্য করা গেছে মুসলিম ইমিগ্রেন্টদের বিরুদ্ধে। শতকরা ২৮ বলেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদেরকে তারা সুনজরে দেখেন না। কুইবেকের অধিবাসীদের মধ্যে এই হার শতকরা ৪৮। আর কানাডার অন্যান্য অঞ্চলে রক্ষণশীল ভোটারদের মধ্যে এই হার শতকরা ৪০%। যারা নিজেদেরকে রক্ষণশীল দলের সদস্য বলে বিবেচনা করেন তারাই সবচেয়ে বেশীমাত্রায় অপ্রসন্নতার মনোভাব প্রদর্শণ করেছেন এবং একই সাথে ধর্মীয় পক্ষপাতিত্বও দেখিয়েছেন জরীপের উত্তর দিতে গিয়ে।

২০১৫ সালের ৯ জুন প্রকাশিত স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার এক রিপোর্টে দেখা যায়, কানাডায় মুসলমান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকেরা আগের তুলনায় অধিক হারে ঘৃণা বা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের শিকার হচ্ছেন। তবে অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকদের প্রতি এই ঘৃণা বা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে।

এই জরীপ তথ্যে প্রসঙ্গে দৈনিক ন্যাশনাল পোস্টের সঙ্গে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিম এর হিউম্যান রাইটস কো-অর্ডিনেটর আমীরা এলগাওয়েবী বলেন, বিষয়টি অপ্রীতিকর এবং এটি প্রমাণ করছে যে, কানাডায় মুসলমানের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত বলছে ২০১৪ সালে এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। সুতরাং বিষয়টির প্রতি আরো বেশী করে নজর দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য যে, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিম এর মতে মুসলমান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের সব খবর মিডিয়াতে আসে না। সে কারণে স্ট্যাটিসটিক্স কানাডা যে হিসেব দেখিয়েছে তা বাস্তব অবস্থার সামগ্রিক চিত্র নাও হতে পারে।

২০১৩ সালের শেষের দিকে Angus Reid পরিচালিত এক এক জরীপেও দেখা যায়, কানাডায় মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি সাধারণ মানুষের মনোভাব বিগত ৪ বছরে (২০০৯-২০১৩) ক্রমশ খারাপের দিকে গেছে। অথচ এই একই সময়ে অন্যান্য ধর্মের লোকজনের প্রতি সাধারণ মানুষের মনোভাবের তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি।

অটোয়া সিটিজেন পত্রিকায় রবার্ট শিবলী নামের এক কলামিস্ট তার কলামে লিখেছেন, “৯/১১ এর ঘটনার পর পশ্চিমা সমাজে একটি আশংকা দেখা দিয়েছে যে, দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া মুসলমান ইমিগ্রেন্টদের কারণে পশ্চিমাদের মূল্যবোধগুলো পদদলিত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। মুসলমানদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব অবশ্য আগেও ছিল যা ইউরাবিয়া (“Eurabia’ is a conspiracy theory and a doomsday scenario about the imminent total Islamisation of Europe)  নামে পরিচিত। সে কারণে পশ্চিমারা মনে করেন, মুসলমানরা বিশ্বাসঘাতক, মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তাদের একটি রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে, মুসলমানদের মধ্যে উচ্চ প্রজনন হার রয়েছে বিধায় তারা শীঘ্রই সংখ্যাগুরুতে পরিনত হবে।”

তিনি আরো লিখেছেন, “পশ্চিমাদের এই বিশ্বাস বা ধারণার কারণে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় রাজনীতিতে বিষবাষ্প যোগ হচ্ছে।

পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, কানাডায় রক্ষণশীলদের মধ্যে নব্য জাতিয়তাবাদের একটি চেতনা নতুনভাবে জাগ্রত হয়ে উঠার পিছনে এই বিষয়গুলোই মূখ্য ভূমিকা পালন করছে।