প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা : কানাডা কতটুকু নিরাপদ?

ডিসেম্বর ২০, ২০১৫

খুরশিদ আলম : গত ১৩ নভেম্বর প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় ১৩০ জন সাধারণ মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর নতুন করে আবারো প্রশ্ন উঠেছে, এর শেষ কোথায়? পরবর্তী টার্গেট কে এবং এই সন্ত্রাসবাদ বিশ্বকে কোথায় নিয়ে যাবে? ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল যে সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গীপনা তার প্রভাব সেদিন এসে পড়েছিল কানাডার মাটিতেও। পশ্চিমা দেশগুলোতে সন্ত্রাসীদের আক্রমন সেই যে শুরু হয়েছিল তা আজো শেষ হয়নি। সন্ত্রাসবাদের সর্বশেষ ঘটনা ঘটলো ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ৯/১১ এর পর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে কানাডার মাটিতেও। গত বছর আমরা দেখেছি, রাজধানী অটোয়াতে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। ঐ হামলায় নিহত হয়েছেন একজন তরুন কানাডীয় সৈন্য। তারো আগে কুইবেকে একজন কানাডীয় সৈন্য নিহত হয়েছেন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে। তিউনিশিয়ার এক মুসলমান যুবক গ্রেফতার হয়েছেন কানাডার ভিয়া (ারধ) রেল সেতু ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করায়। পাকিস্তানী এক মুসলমান যুবক গ্রেফতার হয়েছেন টরন্টোর মার্কিন কনসুলেট অফিস উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করায়। মন্ট্রিয়লের বিমান বন্দর থেকে ১০ জন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল যারা জঙ্গী সংগঠন আই এস এর সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য দেশ ত্যাগ করতে যাচ্ছিল। সন্ত্রাসী সংগঠন আই এস এ যোগ দেওয়ার জন্য ৪ জন বাঙ্গালী তরুন কানাডা ছেড়েছেন এমন খবরও রয়েছে। কয়েক বছর আগে টরন্টোতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ১৮ জন মুসলমান যুবক যারা পার্লামেন্ট ভবন সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ভবন বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। ঐ সকল ঘটনায় এটিই প্রমানিত হচ্ছে যে আগামীতে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাবনা থেকে কানাডাও নিরাপদ নয়। আর নিরাপদ নয় কানাডার মুসলমান জনগোষ্ঠিও। কানাডায় বসবাসরত মুসলমানদের বিপদ আসলে দুই দিক থেকে। দেখা গেছে এ পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের প্রায় সব হামলা পরিচালিত হয়ে আসছে পাশ্চাত্যের বড় শহরগুলোতে। আর ইমিগ্রেন্টদের বাস প্রধানত ঐ বড় শহরগুলোতেই। সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় ঐ সকল বড় শহরের দুর্বল অবস্থানগুলোর উপর। অর্থাৎ যেখানে জনসমাগম বেশী এবং পুলিশ বা সেনাবাহিনীর লোকদের উপস্থিতি কম অথবা নেই এরকম স্থানসমূহে। এবার প্যারিস হামলায়ও আমরা তাই দেখেছি। ঐ রকম হামলার ঘটনা যদি কানাডার কোন বড় শহরে ঘটে তবে সেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে মুসলমানদের উপস্থিতিও থাকতে পারে। নিহত বা আহত হবার সম্ভাবনা থাকে তাদের বেলায়ও। আবার হামলার ঘটনার পর মূলধারার কোন কোন নাগরিক প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সাধারণ মুসলমানদের উপর আরেক দফা হামলা চালাতে পারে। গত বছর পার্লামেন্ট ভবনে সন্ত্রাসী হামলার পরও দেখা গেছে কানাডায় মুসলমানদের উপর বিদ্বেষী হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনা ঘটেছে মসজিদেও। উল্লেখ্য যে, এবার প্যারিসের ঘটনার পর আমরা লক্ষ্য করেছি কানাডা প্রবাসী মুসলমানদের উপর প্রায় অর্ধডজন হামলার ঘটনা ঘটেছে মাত্র কয়েকদিন সময়ের ব্যবধানে। এর মধ্যে আছে পিটারবরোতে মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, থর্নক্লিফ এলাকায় হিজাব পরিহিতা এক মহিলার উপর শারীরিক হামলা চালানো, টরন্টোর সাবওয়ের যাত্রী দুই মুসলমান মহিলাকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করা, টরন্টো ইউনিভারসিটিতে এক মুসলমান ছাত্রের মুখের উপর থুতু নিক্ষেপ করা এবং অটোয়াতে এক মুসলমান মহিলার মেইলবক্সে বিদ্বেষমূলক নোট পাঠানো। এমনকি বিদ্বেষমূলক এই হামলা থেকে বাদ যায়নি হ্যামিলটনের এক হিন্দু মন্দিরও। আমরা আরো লক্ষ্য করেছি, এবার প্যারিসের ঘটনার পর অল্প সময়ের ব্যবধানে কানাডায় মুসলমান জনগোষ্ঠির উপর যে কটি বিদ্বেষী হামলার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। গত ৯ জুন প্রকাশিত স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার এক রিপোর্টে দেখা যায়, কানাডায় মুসলমান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোকেরা আগের তুলনায় অধিক হারে ঘৃণা বা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের শিকার হচ্ছেন। ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিম এর হিউম্যান রাইটস কো-অর্ডিনেটর আমীরা এলগাওয়েবী বলেন, বিষয়টি অপ্রীতিকর এবং এটি প্রমাণ করছে যে, কানাডায় মুসলমানের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের নিজস্ব তথ্য-উপাত্ত বলছে ২০১৪ সালে এই পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। সুতরাং বিষয়টির প্রতি আরো বেশী করে নজর দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কানাডার মাটিতে জঙ্গী হামলার আশংকা নিয়ে নুতন করে উদ্বিগ্ন কানাডার মূলশ্রোতের জনগোষ্ঠিও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্যারিস স্টাইলের জঙ্গী হামলা যে কোন সময়ে যে কোন দেশেই হতে পারে, হতে পারে কানাডায়ও। আর এই ধরণের হামলা প্রতিহত করা খুবই কঠিন কাজ। যেখানে শতসহস্র মানুষের সমাগম হয় সেখানে প্রতিটি ব্যক্তিকে তল্লাশী করা যেমন কঠিন তেমনি কঠিন প্রতিটি ব্যক্তির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা। আর সন্ত্রাসীদের টার্গেটও থাকে ঐ সকল জনসমাগমকে কেন্দ্র করেই। কারণ তারা জানে এই স্থানগুলোতে হামলা চালানো ও আত্মগোপন করে থাকা তুলনামূলকভাবে সহজ। তাছাড়া হামলার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও বেশী হয়। সেই কারণে তা নজর কাড়ে বিশ্ববাসীর। সন্ত্রাসীরাও এমনটিই চায়।

২০১৪ সালের অক্টোবর মাসে কানাডায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন দুই সেনা সদস্য। গত ২২ অক্টোবর অটোয়ায় তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুুডো : ছবি- রয়টার

কেউ কেউ অবশ্য মনে করছেন কানাডার মাটিতে সন্ত্রাসী হামলার আশংকা এই মূহুর্তে কম। কারণ, নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিয়েছেন তারা ইরাক ও সিরিয়া থেকে যুদ্ধবিমান প্রত্যাহার করে নিবে। এটি তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল। ফলে আইএস এর জঙ্গীরা আপাতত কানাডাকে টার্গেট নাও করতে পারে। অন্যদিকে তাদের নতুন টার্গেটে পরিনত হতে পারে রাশিয়া। কারণ ঐ দেশটি সিরিয়াতে আইএস এর আস্তানাগুলোতে বিমান হামলা শুরু করেছে। ইরাক ও সিরিয়াতে আইএস জঙ্গীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত স্টিফেন হারপার ও তার দল। তারা এখনো চাচ্ছে ঐ মিশন চালু থাকুক। তবে যুদ্ধ বিমান প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলেও কানাডার নতুন লিবারেল সরকার আইএস জঙ্গীদের পরাভূত করার অন্যান্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্তে এখনো অটল। কানাডার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হারজিত সাজ্জন সম্প্রতি সিবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন কানাডা অবশ্যই আইএস জঙ্গীদের পরাজিত করার ব্যাপারে জোরালো পদক্ষেপ নিবে। তিনি আরো বলেন, আইএস অবশ্যই একটি হুমকী। কিন্তু তাই বলে আমরা কি তাকে ভয় পাব? অবশ্যই না। কানাডার জনগনের পূর্ণ আস্থা থাকা উচিৎ আমাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর উপর। তবে টরন্টো ইউনিভারসিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপিকা আয়েশা আহমেদ সিবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো আঘাত হানার জন্য কম নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে এমন জায়গাগুলোকেই বেছে নিবে তাদের পরবর্তী হামলাগুলো পরিচালনা করার জন্য যেমনটি করেছে প্যারিসে।” সন্ত্রাসীরা এই জাতীয় কৌশল গ্রহণ করে থাকে শুধুমাত্র অধিক সংখ্যায় মানুষ হত্যা করার জন্য নয়। তারা জানে এরকম ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করা যায় এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারগুলোকে বেকায়দায় ফেলানো যায়। কিন্তু কানাডার নতুন সরকার কি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে নিজ ভূমিতে আইএস সন্ত্রাসীদের হামলা ঠেকানোর জন্য? এই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপিকা আয়েশা আহমেদ বলেন, “ বিশ্বব্যাপী এই ক্ষতিকারক সন্ত্রাসীদের রুখার জন্য কোন ‘ম্যাজিক সিলভার বুলেট’ নেই কারো হাতে। তবে নতুন লিবারেল সরকার ইতিমধ্যেই গবেষকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন যারা এই সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন।” অধ্যাপিকা আয়েশা আহমেদ বলেন, “আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে নতুন এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নতুন উপায় উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে।” টরন্টোর মেকেনজি ইনস্টিটিউট এর নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ কাইলা চাম সাংবাদিকদের বলেন, প্যারিস স্টাইলের হামলা খুব সহজেই ঘটতে পারে কানাডায়। আর এই কৌশলটি বর্তমানে আইএস সন্ত্রাসীদের সাধারণ কৌশলে পরিনত হয়েছে। তবে অন্টারিও প্রভিন্সের কমিউনিটি সেফটি মিনিস্টার ইয়াসীর নাগভি সাংবাদিকদের বলেন, প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার পর কানাডিয়ানরা উঁচু মাত্রার সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে নেই। তবে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি ফেডারেল পাবলিক সেফটি মিনিস্টার র‌্যালফ গডেল বলেন, প্যারিসের ঘটনার পর কানাডায় থ্রেট লেভেল বর্তমান অবস্থা (মধ্যম) থেকে আরো উন্নীত করার কোন কারণ নেই। কিন্তু ইয়াসীর নাগভি ও র‌্যালফ গডেলের এই কথার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায় না নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ডেভিড হ্যারিসের যিনি International Intelligence Program for INSIGNIS Strategic Research Inc এর একজন পরিচালক। টরন্টো সানের কাছে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “কানাডা ও তার এরই মধ্যে ভয়াভিভুত সিকিউরিটি সার্ভিসেস এর লোকদের পক্ষে এটি প্রতিহত করা খুবই কঠিন কাজ হবে যদি কানাডায় প্যারিসের আদলে সন্ত্রাসী হামলা চলে। তিনি আরো বলেন, এটি অনিবার্য যে কানাডাও এ জাতীয় হামলার হুমকী মোকাবেলা করবে।” উল্লেখ্য যে, প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা এমন একটা সময়ে ঘটলো যখন সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে গেলে প্রায় নিñিদ্র অবস্থায়ই ছিল। নিরাপত্তার এই নিñিদ্র অবস্থা চালু রাখা হয়েছিল যখন গত জানুয়ারীতে প্যারিসের চার্লি হেবডো কার্টুন পত্রিকা অফিসে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে পত্রিকাটির সম্পাদকসহ ১২ জনকে গুলি করে হত্যা করে তার পর থেকেই। পত্রিকাটি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর একাধিকবার ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে। এরকম একটি কঠিন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেও যদি প্যারিসে গনহত্যা চালাতে পারে সন্ত্রাসীরা তবে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন  উঠতে পারে যে, কানাডা কতটুকু নিরাপদ? গত বছর কানাডার পার্লামেন্টে যখন সন্ত্রাসী হামলা চলানো হয় তখন এখানে নিরাপত্তার স্তর ছিল মধ্যম পর্যায়ের। কেউ কেউ অবশ্য বলেন, সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলায় প্যারিসের পুলিশ কানাডার পুলিশ থেকে বেশী অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। কারণ, প্যারিস সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলা করে আসছে সেই গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকেই। এই তথ্য জানিয়েছেন রয়েল মিলিটারী কলেজ অব কানাডার ইন্সট্রাকটর ক্রিশ্চিয়েন লুপ্রেক্ট। সিবিসির কাছে দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকার তিনি বলেন, “এতটা অভিজ্ঞতার পরও প্যারিস সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে। আর  তার অর্থ দাড়াচ্ছে প্যারিস স্টাইলের হামলা যে কোন দেশেই হতে পারে।” কিন্তু সন্ত্রাসী হামলা মোকাবেলায় কানাডার অভিজ্ঞতাও কি কম? আমরা সাধারণভাবে জানি কানাডা একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। অথচ ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় শান্তিপ্রিয় এই দেশটিতেও অতীতে বহু সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসীদের ঐ সকল হামলায় এই দেশটিতে মন্ত্রী/এমপিসহ কিছু সাধারণ মানুষের নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ৯/১১ কে যদি সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তবে দ্বিতীয় ভয়াবহ সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে যেটিকে চিহ্নিত করা যায় সেটির পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা হয়েছিল কানাডার মাটিতে বসেই। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৮৫ সালে এয়ার ইন্ডিয়ার দুটি বিমানে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে। ভেঙ্গুভারের শিখ সম্প্রদায়ের একটি জঙ্গী গোষ্ঠির পরিকল্পনা অনুযায়ী এয়ার ইন্ডিয়ার দুটি বিমানে বোমা পেতে রাখা হয়েছিল। এর একটি বোমা বিষ্ফোরিত হয় জাপানের নারিতা বিমানবন্দরে যখন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান থেকে লাগেজ ট্রান্সফার করা হচ্ছিল এবং অন্য বোমাটি বিষ্ফোরিত হয় যখন এয়ার ইন্ডিয়ার দ্বিতীয় বিমানটি আয়ারল্যান্ডের উপকুল দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। নারিতা বিমানবন্দরে বিস্ফোরনে মারা যান ৪ জন। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের উপকুলে বিষ্ফোরিত বোমায় মারা যান ৩২৯ জন যাত্রী যার প্রায় সবাই ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক। অতীতে কানাডার ভূখন্ডে পরিচালিত শত শত সন্ত্রাসী ঘটনায় ধ্বংস হয়েছে অনেক সম্পত্তিও। কানাডিয়ান এনসাইক্লোপেডিয়ার তথ্য থেকে জানা যায় ১৯২৩ সালে  স্পিরিচ্যুয়াল ক্রিশ্চিয়ান রিলিজিয়াস গ্রুপের একটি অংশ ‘সানস অব ফ্রিডম’ ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় প্রথম জঙ্গীপনা বা সন্ত্রাসী হামলা শুরু করে ধর্মের নামে। তারা তাদের ধর্মমতের জীবনযাপন পদ্ধতি, শিক্ষা, বিয়ে, ভূমি মালিকানা ইত্যাদি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পরে এবং সরকারের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়। বোমাবাজী ছাড়াও স্কুল, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রেল লাইন ও বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইনে আগুন লাগিয়ে দিতো এই গ্রুপটি। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশী সময় ধরে চলে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম। তাদের আক্রমনে নষ্ট হয় শত শত স্থাপনা। গত শতকের ষাটের দশকে প্রায় ৩০০ সান্ত্রাসী হামলা পরিচালিত হয় কানাডার ভূখন্ডে যার প্রায় সবগুলোর জন্য দায়ি এই সানস অব ফ্রিডম গ্রুপ এবং কুইবেকের FRONT DE LIBÉRATION DU QUÉBEC (FLQ)নামের একটি সংগঠন। সানস অব ফ্রিডম সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতো ধর্মের নামে আর ঋখছ সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতো কুইবেকের স্বাধীনতার নামে। FLQ কানাডার বিভিন্ন স্থাপনার উপর অনেক বোমা হামলা চালিয়েছে। তাদের ঐ হামলায় কিছু লোকের মৃত্যুও ঘটেছে। ১৯৭০ সালে এই গ্রুপের সদস্যরা মন্ট্রিয়লে ব্রিটিশ ট্রেড কমিশনার জেমস ক্রস ও  কুইবেকের লেবার মিনিস্টার  পেইরী ল্যাপরটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেই সময় সরকার কঠোর অবস্থান নেয় এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে। কিন্তু অপহৃত লেবার মিনিস্টারকে বাচাতে পারেনি। সন্ত্রাসীরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। গত শতকের আশির দশকের গোড়ার দিকে ডিরেক্ট এ্যাকশন নামের আরেকটি নৈরাজ্যবাদী গ্রুপ কানাডায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছিল পরিবেশ রক্ষার নামে। তারা পর্নোগ্রাফি এবং অস্ত্র কারখানার বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিল। এই গ্রুপটি তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থ যোগার করতো প্রতারণা ও ডাকাতি করে। আশি ও নব্বুই দশকের দিকে আরেকটি গ্রুপ পরিবেশ ও প্রাণী অধিকার রক্ষার নামেও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। তবে এগুলো ছিল খুবই সীমিত আকারের সন্ত্রাসী কার্যক্রম। ইতিপূর্বে কানাডায় যত সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে তার বেশীর ভাগই ছিল নিজস্ব ভৌগলিক সীমানার মধ্যে। তবে কানাডার ভূখন্ডে পরিচালিত এসব সন্ত্রাসী ঘটনার কোন কোনটির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল অন্যদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও। উদাহরণ হিসেবে আইরিশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কথা বলা যেতে পারে। আইরিশ বিচ্ছিন্নাতাবাদীদের সংগঠনFENIAN Brotherhood কানাডার মাটিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত করেছিল ব্রিটেন থেকে আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা লাভের জন্য চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে। তারা কানাডার বিভিন্ন অঞ্চলে সেতু ধ্বংস করা সহ বেশকিছু সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে। স্থানীয় সামরিক বাহিনীর সঙ্গেও তারা বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরতো। ধারনা করা হয় এই গ্রুপের সদস্যদের হাতেই খুন হন কানাডার কনফেডারেশন এর জনক ও মেম্বার অব পার্লামেন্ট ডারাসী ম্যাগগি। ষাটের দশক থেকে শুরু করে আশির দশক পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০ টি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত হয় কানাডার মাটিতে। ১৯৬৫ সালে কানাডার এডমনটনে  অবস্থিত একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এয়ারপোর্টে দুটি মার্কিন জঙ্গী বিমান ডিনামাইট মেরে ধ্বংস করে দেয় একটি গ্রুপ। এরা ভিয়েতনামে মার্কিনী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছিল। ১৯৬০ সালে ক্রোয়েশিয়ান চরমপন্থীরা অটোয়ায় যুগোশ্লাভিয়ার দূতাবাসে বোমা হামলা চালায়। ১৯৬৬ সাল ও ১৯৮০ সালের মধ্যে কিউবার কেস্ট্রো বিরোধী গ্রুপ কানাডায় তাদের নিজেদের বিভিন্ন স্থাপনায় বেশ কয়েকবার বোমা হামলা চালায়। এরকম আরো কিছু ছোটখাট সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলে আশির দশক পর্যন্ত যার সঙ্গে জড়িত অন্যদেশ থেকে আসা ইমিগ্রেন্টরা অথবা স্থানীয় লোকেরা যাদের উদ্দেশ্য ছিল অন্যদেশের রাজনৈতিক বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করা। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে কানাডায় সন্ত্রাসবাদ নতুন কোন বিষয় নয়। সন্ত্রাস মোকাবেলা ও তা দমন করার ক্ষেত্রে দেশটির অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে অতীতের ঐ সব সন্ত্রাসী হামলা যারাই চালিয়েছে তারা কেউই আত্মঘাতি সন্ত্রাসী ছিল না এবং ঐ সব সন্ত্রাসী হামলায় বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হলেও মানুষের মৃত্যুর হার ছিল খুবই কম। কিন্তু এখন আইএস এর সমর্থনে বা তাদের হয়ে যারা সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলোতে তারা সকলেই আত্মঘাতি সন্ত্রাসী এবং তাদের হামলাগুলো পরিচালনা করা হয় গণহারে নিরীহ মানুষ হত্যা করার জন্য। বিপদ বা আতঙ্কের বিষয়টি ওখানেই। আর এ জাতীয় সন্ত্রাস মোকাবেলায় কানাডার অভিজ্ঞতা কম সে কথা বলাই যায়। গত বছর পার্লামেন্ট ভবনে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল সেটি ছিল একক ব্যক্তির হামলা এবং লক্ষ্যনীয় যে, ঐ একজন মাত্র ব্যক্তি প্রায় বিনা বাধায়ই বন্ধুক নিয়ে পার্লামেন্ট ভবনের অনেকদূর ভিতর পর্যন্ত চলে যেতে সক্ষম হয়েছিল। সেটি যদি একক ব্যক্তির হামলা না হয়ে সঙ্ঘবদ্ধ হামলা হতো তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারতো সেদিন। কানাডার পার্লামেন্ট ভবন অতি সুরক্ষিত একটি এলাকা। তারই যদি হয় এই অবস্থা তখন যে সকল স্থানে সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটে সে সকল স্থানে আত্মঘাতি সন্ত্রাসীদের হামলা পরিচালিত হলে কি পরিনতি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। কানাডার ntegrated Terrorism Assessment Centre (ITAC) এর হিসাব অনুযায়ী দেখা যায় ৯/১১ এর ঘটনার পর এ পর্যন্ত ১৯৪ জন কানাডিয়ান নাগরিক নিহত হয়েছেন সন্ত্রাসী কর্তৃক অথবা সন্ত্রাসীদের দমন করতে গিয়ে। এদের মধ্যে ১৫৮ জন নিহত হয়েছে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে। বাকি ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, ভারত ও মরক্কোতে। উপরের হিসাবটি ২০১৩ সালে তৈরী করা। ২০১৪ সালে কানাডায় সন্ত্রাসীদের হামলায় যে দুইজন সৈন্য মৃত্যুবরন করেন তাদের হিসাব এতে নেই। এই দুইজনের একজনের মৃত্যু হয় কুইবেকে এক কনভার্টেড মুসলমান যুবকের হামলায়। সন্দেহভাজন ঐ সন্ত্রাসীর নাম মার্টিন কুট্যুর রুল্লো। মার্টিন দুই দুই সেনা সদস্যকে গাড়ি চাপা দেন। এতে প্যাট্রিক ভিনসেন্ট নামের এক সেনা সদস্য নিহত হন এবং অপরজন আহত হন। গাড়ি চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন মার্টিন কুট্যুর রুল্লো। অপরজনের মৃত্যু হয় পার্লামেন্ট ভবনের সামনে আরেক কনভার্টেড মুসলমান যুবকের হামলায়। সন্ত্রাসী ঐ যুবকের নাম মাইকেল জেহাফ বিবু। মাইকেল বন্দুক হাতে পার্লামেন্টে প্রবেশের আগে ভবনের অনতিদূরে অবস্থিত ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে কর্তব্যরত এক সেনা সদস্য কর্পোরাল নেথান কিরিলো’কে পিছন দিক থেকে গুলি করে হত্যা করেন। উল্লেখ্য যে, হামলাকারী এই দুই কনভার্টেড মুসলমান যুবক মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন, ছিলেন ড্রাগ এডিক্টেড। এরা দুইজনই হোমগ্রোন টেররিস্ট বা সন্ত্রাসী। বিষেজ্ঞদের ধারনা, কানাডায় যদি আবারো আত্মঘাতি জঙ্গী বা সন্ত্রাসী হামলা হয় তবে এই হোমগ্রোন সন্ত্রাসীদের দ্বারাই হবে। প্যারিসে আত্মঘাতি হামলায়ও হোমগ্রোন টেররিস্টরা জড়িত ছিল। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় জঙ্গী মনোভাবাপন্ন কিছু তরুন ও যুবক রয়েছেন কানাডায়। সরকারী লিস্টেই আছে ৯০ জনের বেশী। তাদের উপর কড়া নজরদারী রয়েছে গোয়েন্দাদের। তারা যাতে দেশের বাইরে গিয়ে ইসলামী স্টেটের সঙ্গে যুক্ত না হতে পারেন সে জন্য তাদের অনেকের পাসপোর্টও আটক করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে কুইবেকে এক সেনা সদস্যকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করেছে যে যুবকটি  তার পাসপোর্টও আটক করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও তাকে জঙ্গীপনা থেকে বিরত রাখা যায়নি। সে দেশের ভিতরেই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। মাইকেলের পাসপোর্ট ছিল না যিনি পার্লামেন্ট ভবনের সামনে গুলি করে এক সৈন্যকে হত্যা করেছেন। তিনি পাসপোর্ট বানাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। পরে তিনিও স্বদেশের মাটিতেই জঙ্গী হামলা চালিয়েছেন। কানাডার সরকারী ভাষ্যেও বারবার বলা হচ্ছে এই হোমগ্রোন সন্ত্রাসীরা কানাডার নিরাপত্তার প্রতি একটি হুমকী। এরা নিজেদের পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর জন্য এবং নতুন নতুন সদস্য যোগার করার জন্যও কাজ করে যাচ্ছেন। হোমগ্রোন সন্ত্রাসীদের টার্গেট থাকে নির্দিষ্ট কিছু মসজিদ ও মাদ্রাসা। সেখানকার কোমলমতি শিশু-কিশোরদেরকে বিশেষ করে যে সকল শিশু-কিশোরদের বাবা-মা গোড়াপন্থী তাদেরকে খুব সহজেই মগজধোলাই করতে সক্ষম হন হোমগ্রোন সন্ত্রাসীরা। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ ও দাতা সংস্থা থেকেও আসে প্রচুর পরিমানের অর্থ যেগুলো ব্যয় করা হয় এই সকল নির্দিষ্ট মসজিদ ও মাদ্রাসায়। অর্থ যখন আসে বা দেওয়া হয় তখন তার সাথে বিভিন্ন শর্তও থাকে। এদিকে লিবারেল সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২৫ হাজার সিরিয়ান উদ্বাস্তু গ্রহনের কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু কেউ কেউ বলছেন এই উদ্বাস্তুদের সঙ্গে কিছু কিছু আইএস জঙ্গী বা সন্ত্রাসীও কানাডায় প্রবেশ করতে পারে যারা পরবর্তীতে কানাডার জন্য বিরাট হুমকী হয়ে দাড়াবে। হয়তো এদেরই কেউ কেউ কানাডার হোমগ্রোন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিচালিত করতে পারে প্যারিস স্টাইলের সন্ত্রাসী হামলা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সিরিয়ান উদ্বাস্তুদেরকে একাধিকবার সিকিউরিটি চেকের আওতায় আনা হবে। কানাডায় আসার আগে এবং কানাডায় আসার পরও এই চেক এর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া অতিরিক্ত নিরাপত্তা হিসেবে কোন একক ব্যক্তিকে কানাডায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। কেবল যাদের পরিবার রয়েছে তারাই আসার অনুমতি পাচ্ছে সিকিউরিটি চেকসহ যাবতীয় অনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের পর। শান্তিপূর্ণ দেশ কানাডার অশান্তি এখন এই হোমগ্রোন সন্ত্রাসীরা। কখন কি কান্ড ঘটিয়ে বসে তারা সেই নিয়ে সন্ত্রস্ত অনেকে। প্যারিসের ঘটনার পর এই আতংক যেন আরো বেশী করে দানা বেধেছে। অন্যদিকে অতন্দ্রপ্রহরায় থাকতে হচ্ছে কানাডার গোয়েন্দা ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। সরকরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারা বিভিন্ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করার জন্য এবং চূড়ান্তভাবে এদের দমন করার জন্য। তবে এর জন্য প্রয়োজন আরো বিস্তৃত পরিকল্পনা ও কার্যক্রম এবং কমিউনিটির সদস্যসহ স্থানীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে আরো বেশীমাত্রায় সম্পৃক্ত হয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাতে করে সহজেই সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা যায় এবং তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যায়।