বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার কানাডীয় কিশোর আইএসে!

মার্চ ১৯, ২০১৫:

প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক:   টরন্টো এলাকা থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার কিশোর মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা। কানাডার সিবিসি টিভির অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অন্টারিওর টিমিনিস এলাকার এন্ড্রু পলিন নামের এক কানাডীয় যুবক যে পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তিরিত হয় এবং আবু মুসলিম নাম ধারণ করে , সে-ই এই চার বাংলাদেশী তরুনকে আইএস জঙ্গী সংগঠনে যোগ দিতে উৎসাহ যুগিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এন্ড্রু ২০১২ সালে সিরিয়ায় জঙ্গীদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরবর্তীতে সে ১১ মিনিটের একটি ভিডিও চিত্র অনলাইনে প্রকাশ করে যাতে পশ্চিমা যুবকদেরকে জঙ্গীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এন্ড্রু অবশ্য ২০১৩ সালের সমারে জঙ্গীদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে। তখন তার বয়স হয়েছিল ২৪।

এন্ড্রুর এক বন্ধু আবু তুরাব যিনি মিসিসাগায় থাকতেন তিনি ইতিপূর্বে টুইটারে বিভিন্ন পোস্ট দিতেন জঙ্গীদের সমর্থনে। এ সমস্ত পোস্ট মাঝে মধ্যে এমন ভয়ঙ্কর হতো যে টুইটার কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে তার একাউন্ট একাধিকবার বন্ধ করে দিয়েছিল। গত বছর ১৩ জুুলাই এই আবু তুরাব টুইটারে ম্যাসেজ পোস্ট করে এবং বলে, আমরা আবু মুসলিমের বন্ধু। আমরা এখন টার্কীতে অবস্থান করছি। আমরা জানতে চাচ্ছি কি করে সিরিয়াতে যাওয়া যাবে এবং সেখানে গিয়ে কি করে ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয়া যাবে। আবু তুরাবের সঙ্গে যারা ছিলেন তারা হলেন -তাবিরুল হাসিব, আবদুল মালেক, নূর ও আদিব। তাদের মধ্যে হাসিবের ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেছে পুলিশ। এই চারজনই বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এবং স্কারবরো এলকার বাসিন্দা।

তাবিরুল হাসিব টরন্টোর মনার্ক পার্ক কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করে। স্কুলে সে খেলাধূলায় বেশ সক্রিয় ছিল। পরবর্তীতে সেন্টেনিয়াল কলেজে ভর্তী হয়।

আবদুল মালেক এর বাবা জানান, তার ছেলে কখনো পাবলিক স্কুলে পড়াশুনা করেনি। সে টরন্টোতে বরাবরই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছে।

কানাডায় জন্ম নেয়া চার কিশোরের সবাই স্কুলছাত্র। তাদের বয়স ২০ বছরের নিচে। এ ঘটনায় তাদের বাবা-মা উদ্বিগ্ন।

২০১২ সালে এই চার কিশোর প্রথম নিখোঁজ হয়। অভিভাবকরা বিষয়টি টরন্টো পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ জানতে পারে, আইএসে যোগ দিতে আবু মুসলিমের সঙ্গে ওই চার কিশোর কানাডা ছেড়েছে।

নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ পর অভিভাবকরা জানতে পারেন তাদের সন্তানরা তখনো সিরিয়ায় প্রবেশ করেনি। তারা লেবাননে অবস্থান করছে। পরে তারা লেবাননে গিয়ে বুঝিয়ে ছেলেদের কানাডায় ফিরিয়ে আনেন। জব্দ করা হয় তাদের পাসপোর্ট।

২০১৪ সালের ৬ জুলাই চার কিশোর টরন্টো থেকে আবার নিখোঁজ হয়। এবার তারা মোহাম্মদ আলী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তুরস্কের উদ্দেশে টরন্টো বিমানবন্দর ছাড়ে। পরে ইস্তাম্ব্বুল থেকে টুইটারে বার্তা দেন মোহাম্মদ আলী। এতে সিরিয়ায় প্রবেশ করার পথ জানতে চান তিনি।

এ ঘটনায় ওই চার কিশোরের বাবা-মা হতাশ ও উদ্বিগ্ন। পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন ঘন ঘন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। আবু তুরাবের মতো বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই চার জঙ্গী টুইটার বা অন্য কোন অনলাইন মিডিয়াতে সক্রিয় নয়। গত বছর নভেম্বর মাসে এই চারজনের একজন তাবিরুল হাসিব টরন্টোতে তার মাকে ফোন দিয়েছিল। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই চার জঙ্গী তরুন এখন

কোথায় কি অবস্থায় আছে কেউ জানে না। তারা বেঁচে আছে না মারা গেছে তাও কেউ জানে না। তাদের বাবা-মা’র ধারণা তাদের ব্রেইন ওয়াশ করা হয়েছে। তবে কমিউনিটির কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন এই বলে যে, আবদুল মালেক নামের বাংলাদেশী ঐ তরুনকে তার বাবা – মা কি করে মাদ্রাসায় পাঠালেন এবং কি উদ্দেশ্যেই বা পাঠিয়েছিলেন?