কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেল মহান একুশে
মোহাম্মদ আলী বোখারী
ফেব্রুয়ারী ৭, ২০১৫ : কানাডার পশ্চিম তীরবর্তী ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেয়েছে মহান একুশে তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ মর্যাদার ক্ষেত্রে প্রদত্ত এক যৌথ ‘প্রোক্লেমশন’ বা ঘোষনায় স্বাক্ষর করেছেন প্রদেশটির দায়িত্বশীল ২৯তম লেফটেনেন্ট গভর্ণর জুডিথ গুইচন, যিনি কমনওয়েলথ প্রধান রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিনিধি এবং একই সঙ্গে সেখানকার এটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী সুজেন এন্টন।
এ তথ্যটি দিয়েছেন বাংলাদেশের একুশে পদকপ্রাপ্ত একমাত্র প্রতিষ্ঠান ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি বিসি’র বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম মওলা, যিনি প্রদেশটির হেরিটেজ আর্ট ওয়ার্ক হিসেবে ২০০৯ সালে বেয়ার ক্রিক পার্কে প্রতিষ্ঠিত ‘লিঙ্গুয়া আকুয়া’র উদ্যোক্তাও বটে। এই প্রতিবেদককে দেয়া অপর এক তথ্যে তিনি জানিয়েছেন, প্রায় তিন বছর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে মহান একুশের এই প্রাদেশিক স্বীকৃতিটি অর্জনে তিনি সক্ষম হয়েছেন।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের লেফটেনেন্ট গভর্ণর জুডিথ গুইচন ও এটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী সুজেন এন্টন স্বাক্ষরিত ওই ‘প্রোক্লেমশন’ বা ঘোষনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্যক্তির পরিচিতি ও উন্নয়নে মাতৃভাষা হচ্ছে মুখ্য। ভাষা যে কোনো সভ্যতা ও সংস্কৃতির সুতিকাগার এবং অপরাপর মানুষের সঙ্গে সংযোগ সাধনের মাধ্যম। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের সরকারী দুটি ভাষা ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চের পাশাপাশি রয়েছে ২৬ শতাংশ জনগোষ্ঠির ভিন্ন ভাষা। ভাষাগত বৈচিত্র্য ও বহুজাতিকতা এই প্রদেশকে বিকশিত করেছে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সংলাপ ও মর্যাদা হচ্ছে কানাডীয় জীবনযাত্রার নিয়ামক উপাদান। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সন্মানজনকভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে আদিম ভাষাভাষি ও আবহমানকাল ধরে বিস্তৃত অপরাপর ভাষার সুরক্ষায় নেতৃত্ব দিতে পারে। কেননা বিশ্বের বিগত প্রজন্মের ৬,৫০০ ভাষার অধিকাংশই আজ বিলুপ্তির পথে। সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘের ইউনেস্কো প্রতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সে জন্য আমরাও ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষনা দিচ্ছি এবং প্রদেশের ‘গ্রেট সীল’টি তাতে যুক্ত করছি।
এ ঘোষনার পাশাপাশি আমিনুল ইসলাম মওলা তার সাম্প্রতিক এক নিবন্ধ ‘স্যারির মাতৃভাষা উৎসব এবং কিছু গল্পকথা’য় দিবসের প্রেক্ষাপটে অপরাপর কর্মপ্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরেন। সেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের উদ্যোক্তা ও ‘মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার্স অব দ্য ওয়ার্ল্ড সোসাইটি বিসি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রফিকুল ইসলামসহ অন্যদের সবিশেষ প্রচেষ্টার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।