বলপূর্বক বিয়ে আর ধর্ষণের মধ্যে পার্থক্য কি?

খুরশিদ আলম

বলপূর্বক বিয়ে আর ধর্ষণের মধ্যে পার্থক্য কি? এক নারীবাদি নেত্রীর কাছে এ ছিল আমার প্রশ্ন। তিনি দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলেন, “কোন পার্থক্য নেই। আর যেহেতু পার্থক্য নেই সেহেতু ধর্ষণের জন্য যে সাজা দেয়া হয়, বলপূর্বক বিয়ে করার জন্যও সেই একই সাজা দেয়া উচিৎ।

পাঠক, আমি জানি অনেকেই এ মতের সাথে একমত হবেন না। কারণ, বলপূর্বক বিয়ে করা বা দেয়াটাকে অনেকেই অপরাধ হিসেবে দেখেন না। পরিবারের মর্যাদা রক্ষা করা, সম্পত্তি রক্ষা করা, ধর্ম রক্ষা করা এবং এই প্রবাসে আত্মীয়দের স্পন্সর করার স্বার্থে যারা এই কর্মটি করে থাকেন তারা কোনভাবেই মেনে নিবেন না যে বলপূর্বক বিয়ে আর ধর্ষণ সমার্থক।

কানাডার মতো একটি উন্নত ও সুসভ্য সমাজে বাস করেও আজকে আমাদের ইমিগ্রেন্টদের  বিশেষ করে এশিয় ইমিগ্রেন্টদের মধ্যে অনেককেই এই কর্মটি করতে দেখা যায়। আর এটি প্রতিনিয়তই ঘটছে এখানে নিভৃতে ও লোকচক্ষুর অন্তরালে। দু একটি ক্ষেত্রে নারীরা (যারা সাহসী) প্রতিবাদী হয়ে উঠলে তা আর লোকচক্ষুর অন্তারালে থাকে না। পাড়া-প্রতিবেশীরা ঘটনাটি জেনে যায়, জেনে যায় আইনশৃংলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

সম্প্রতি বলপূর্বক বিয়ের ওপর একটি জড়িপ চালিয়েছে এখানকার সাউথ এশিয়ান লিগাল ক্লিনিক অব ওন্টারিও। গত ২০ সেপ্টেম্বর টরন্টোতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। তাদের ঐ প্রতিবেদনের তথ্যে দেখা যায় ২০১০ থেকে ২০১২ সাল এই দুই বছরে ওন্টারিওতে দুই শতাধিক নারীকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে।

সংস্থাটি গত দুই বছরে ২১৯টি বলপূর্বক বিয়ের ঘটনার কথা জানতে পারে। তাদের তথ্যে দেখা যায়, ভিকটিমদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই ছিল নারী। যারা ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে তাদের মধ্যে ৮১ শতাংশের বয়স ছিল ১৬ থেকে ৩৪ বছর। প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, দাদা-দাদি, নানা-নানি এবং ধর্মীয় নেতারা ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়।

এখানে লক্ষ্যনীয় যে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা বলপূর্বক বিয়ের পক্ষে সমর্থন দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে নারী সদস্য অর্থাৎ মা, বোন, দাদি ও নানিরাও আছেন। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে নারী হয়েও নারীর এ সর্বনাশ তারা কেন ডেকে আনছেন?

অথবা ব্যাপারটি এভাবেও দেখা যেতে পারে যে, এটি আসলে সর্বনাশ নয়। পাত্রীর মঙ্গলের কথা চিন্তা করেই তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারণ, কোন বাবা-মা চান না তাদের সন্তানদের অমঙ্গল হোক। বলপূর্বক বিয়ের শিকার এই পাত্রীর মা, বোন, দাদি ও নানিরাও হয়তো একই প্রক্রিয়ায় সংসার জীবনে প্রবেশ করেছেন। অর্থাৎ জীবন সঙ্গী নির্বাচনে তাদের কোন ভূমিকা বা ইচ্ছা-অনিচ্ছার সুযোগ  ছিল না। অভিবাকরা যাকে পছন্দ করেছেন তার গলায়ই তারা মালা পড়িয়েছেন বাধ্য হয়ে।

কিন্তু এই বলপূর্বক বিয়ের শিকার কজন মহিলা জোরগলায় বলতে পারবেন যে সংসার জীবনে তারা সুখী ছিলেন? সারাটি জীবন কি তারা অভিনয় করে পার করেননি? অপছন্দের মানুষের সঙ্গে কি দাম্পত্য সুখ হয়? তাদের সংসার জীবন যে ছিল এক অসহনীয় যন্ত্রণা, এক অসহনীয় অপমান এবং সব মিলিয়ে জীবনভর এক ট্রাজেডি এ কথা কি তারা জোরগলায় অস্বীকার করতে পারবেন?

সাউথ এশিয়ান লিগাল ক্লিনিক অব ওন্টারিওর জরীপে দেখা গেছে, জোর পূর্বক বিয়ে করতে বাধ্য হওয়া অনেকেই নানা ধরণের নির্যাতনের শিকার হয়। এরমধ্যে হুমকি ৬৮ শতাংশ, শারীরিক নির্যাতন ৫৯ শতাংশ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ২৬ শতাংশ। কানাডার  মতো একটি আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় এবং যেখানে ৯১১ এ কল করার পর ৪/৫ মিনিটের মাথায় পুলিশ এসে হাজির হয় সেখানেই যদি হয় এই অবস্থা তাহলে এশিয়ার মতো পিছিয়ে একটি মহাদেশের হাল কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। আর সেই এশিয় সমাজব্যবস্থায় বলপূর্বক বিয়ের শিকার নারীদেরই কেউ কেউ কানাডায় এসে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের নারীদেরকেও বিয়ে দিচ্ছেন বলপ্রয়োগ করে।

আগেই উল্লেখ করেছি, পরিবারের মর্যাদা রক্ষা করা, সম্পত্তি রক্ষা করা, ধর্ম রক্ষা করা এবং এই প্রবাসে আত্মীয়দের স্পন্সর করার স্বার্থে একশ্রেণীর লোকেরা তাদের পরিবারের মেয়ে বা নারী সদস্যদেরকে বলপূর্বক বিয়ে দিয়ে থাকেন। সাউথ এশিয়ান লিগাল ক্লিনিক অব ওন্টারিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করতে বাধ্য করার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে কানাডার মুসলিম সমাজে। হিন্দু, শিখ ও খ্রীষ্টান কমিউনিটিতেও এ ধরণের ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশী কমিউনিটিতেও এই বলপূর্বক বিয়ের  ঘটনা ঘটছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাত্রীকে জোর করে দেশে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। কোন কোন  ক্ষেত্রে পাত্রী উপায় না দেখে ঢাকায় কানাডীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিয়ে রোধ করার চেষ্টা নিয়েছে। কিন্তু যারা এই সাহসটুকু দেখাতে পারেননি তারা সাময়ীকভাবে হয়তো ঐ বিয়েকে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তী এক বা দুই বছরের মাথায় দেখা গেছে বিয়ে ভেঙ্গে গেছে।

কানাডায় যে সকল ইমিগ্রেন্ট পরিবার ধর্মান্ধ, অল্পশিক্ষিত এবং সামাজিকভাবে পিছনে  পড়ে আছেন তারাই সাধারণত এই বলপূর্বক বিয়ের সংস্কৃতিকে লালন করে আসছেন। আর এতে ইন্ধন যোগাচ্ছেন এক শ্রেণীর গোড়া ধার্মীক নেতৃত্ব।

প্রবাসে নিজ নিজ পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় থাকুক এটি সবাই চান। পরিবারের কোন মেয়ে যদি বিধর্মী কোন ছেলের সঙ্গে অথবা অসবর্ণ কোন ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে তবে তা মেনে  নেয়া যে কোন অভিবাকের পক্ষেই কঠিন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মেয়েকে ফিরিয়ে এনে বলপূর্বক অন্য কারো সাথে বিয়ে দেয়ার পরিনতিটিও কখনোই ভাল হয় না। ছেলেদের ব্যাপারেও কথাটি সত্যি। বলপূর্বক বিয়ের শিকার কোন কোন পরিবারের ছেলেরাও হয়ে থাকে। অবশ্য এদের সংখ্যা বা হার অতি সামান্য।

প্রবাসে ইমিগ্রেন্ট অভিবাকদের একটি বিষয়ে মনে রাখা উচিৎ যে, তারা তাদের ছেলে-মেয়েদের অনুরোধে বা আকুতি মিনতির কারণে এদেশে আসেননি। প্রথমত তারা তাদের নিজেদের সুবিধার কারণেই এদেশে এসেছেন। অনেকে দোহাই দেন ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এদেশে আসা। হ্যা, কথাটি একেবারে মিথ্যে নয়, কিন্তু প্রথমত তারা এসেছেন  নিজের সুবিধার  কারণে। বাকি কারণগুলো সেকেন্ডারী। আর অভিবাকরা কানাডায় এসেছেন এ কথা জেনেই যে, এখানকার সমাজব্যস্থা বিজাতীয়। তারা জেনেই এসেছেন যে, এখানকার সংস্কৃতি, এখানকার আইন, এখানাকার শিক্ষাব্যবস্থা,এখানকার রীতি-নীতি সবই তার ইচ্ছের অনুকুলে নাও হতে পারে। আর অনুকুলে না হওয়ার কারণে এবং মেয়েরা সেই সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যেতে চাইলে তাদেরকে গলাটিপে মেরে ফেলতে হবে বা গাড়ির ভিতর এক সঙ্গে তিন মেয়েকে বসিয়ে সেই গাড়ি খালের পানিতে ফেলে দিয়ে দূর্ঘটনার নাটক সাজাতে হবে তা তো হতে পারে না। যদি তাই করতে হবে তবে তারা এদেশে কেন এসেছেন। তাদের সেই পিছিয়ে পরা সমাজব্যবস্থায়ইতো তারা থেকে যেতে পারতেন যেখানে বলপূর্বক বিয়ে অপরাধ নয়, এমনকি অনারকিলিং এর নামে নিজ সন্তানকে হত্যা করাও যেখানে পাপ বলে গন্য করা হয় না!

উল্লেখ্য যে, কানাডায় যারা বলপূর্বক বিয়ে দেয়ার পক্ষপাতি বা গোড়াঁ মুসলমান তারা নানান সময়ে  নানারকম বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। আমরা দেখেছি হিজাব পরতে না চাওয়ার কারণে ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর মোহাম্মদ পারভেজ নামের এক ব্যক্তি তাঁর ১৬ বছর বয়সী কন্যা আকসা পারভেজকে গলা টিপে হত্যা করেন নিজ বাসায়। এ কাজে তাকে সহায়তা করেছে তার ছেলে। পরে বিচারে তাঁদের দুজনেরই যাবজ্জীবন শাস্তি হয়।

অনার কিলিং তথা পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে নিজের প্রথম পক্ষের স্ত্রী রোনা আমীর মোহাম্মদসহ তিন কন্যাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন আরেক ব্যক্তি যাঁর নাম মোহাম্মদ সাফিয়া। এখানেও তাকে সহায়তা করেছেন তাঁর ছেলে। সঙ্গে অবশ্য মোহাম্মদ সাফিয়ার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী তোবা ইয়াহিয়াও সহায়তা করেছেন। ঘটনাটি ঘটে ২০০৯ সালে জুন মাসে। সাফিয়ার বড় মেয়ে জয়নব স্কুলে তার এক সহপাঠির প্রেমে পড়েছিল। অন্যদিকে সাফিয়ার প্রথম পক্ষের স্ত্রীও আলাদা হয়ে যাওয়ার হুমকী দিচ্ছিল নানা কারণে। বিষয়টি মোহাম্মদ সাফিয়ার পছন্দ হয়নি। পরে তিনি একদিন পরিকল্পনামাফিক পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে যান নায়াগ্রা ফলসে। সেখান থেকে মন্ট্রিয়লে ফেরার পথে মোহাম্মদ সাফিয়া তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী রোনা আমীর ও তাদের তিন কন্যা জয়নব, সাহার ও গীতাকে (বয়স যথাক্রমে ১৯, ১৭ ও ১৩) কিংস্টনের কাছে এক খালের মধ্যে গাড়িসহ ডুবিয়ে হত্যা করেন। বিষয়টি পরে প্রমানিত হলে আদালত মোহাম্মদ সাফিয়া, দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী তোবা ইয়াহিয়া ও তাঁদের ছেলে হামেদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। এরকম অনার কিলিং এর ঘটনার নজীর আরো আছে এই কানাডায়।

বলপূর্বক বিয়ের পরিনতি যে ভাল হয়না তা আমরা দেখেছি সাউথ এশিয়ান লিগাল ক্লিনিক অব ওন্টারিওর জরীপ থেকে। যৌন নির্যাতনসহ নানারকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে হয়ে নারীদেরকে। এইসব নারী রক্ষণশীল পরিবার ও পরিবেশে বড় হওয়ার কারণে নির্যাতনের বিষয়গুলো সাধারণত চেপে যান। লোকলজ্জা ও নির্যাতন আরো বেড়ে যেতে পারে এই ভয়ে তারা মুখবুঝে এগুলো সহ্য করেন। নিজ পিতা-মাতার কাছ থেকেও খুব একটা সহযোগিতা বা সহনুভূতি পান না নির্যাতনের শিকার এই নারীদের অধিকাংশই। পিতা-মাতারা নির্যাতনের শিকার ঐ নারীকে বুঝাতে চেষ্টা করেন যে এটি তার স্বামীর  ঘর। এখানেই তাকে থাকতে হবে। নির্যাতনের বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে তা আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে, লোকে ছি ছি করতে পারে সেই ভয়েও অনেক অভিবাক তাদের মেয়েকে মুখবুজে তা সহ্য করার পরামর্শ দেন। এভাবে অনেক ঘটনা লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যায়। কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের জরীপ রিপোর্টে ঐ ঘটনাগুলো সঠিকভাবে চিত্রায়িত হয় না। আরো দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, বলপূর্বক বিয়ের বিরুদ্ধে কানাডায় সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই।

কানাডায় মুসলমানদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। স্ট্যাটিসটিকস কানাডার হিসাব মতে বর্তমানে কানাডার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩.২ ভাগই মুসলমান। সংখ্যার হিসেবে তা প্রায় ১০ লাখ। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, আগামী ২০ বছরে কানাডায় মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে তিন গুন। অর্থাৎ প্রায় ৩০ লাখে গিয়ে দাড়াবে। এখন মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে যদি বলপূর্বক বিয়ের হারও বাড়তে থাকে তবে তা নিশ্চিতভাবেই আশংকার বিষয়।

আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা একটি মাল্টি কালচারাল সোসাইটিতে বসবাস করছি। আর অন্যের কালচার বা সংস্কৃতি মানেই যে খারাপ কিছু এই মানসিকতাও আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। অন্য সংস্কৃতির ভাল দিকগুলো গ্রহণ করার মধ্যে কোন দৈন্যতা নেই। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও তাই শিখাতে হবে। খারাপ দিকগুলো বাদ দিয়ে ভাল দিকগুলো গ্রহণ করতে পারলে কানাডার এই মাল্টিকালচারাল সোসাইটিতে পরিবারপরিজনদের নিয়ে বসবাস করা আমাদের মতো ইমিগ্রেন্টদের জন্য অনেক সহজ হবে। বিতারিত হবে অনার কিলিংয়ের সংস্কৃতিসহ অনেক কুসংস্কার ও বদনাম। বন্ধ হবে বলপূর্বক বিয়ে, সেই সাথে যৌন নির্যাতনসহ শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনও।

খুরশিদ আলম

সম্পাদক ও প্রকাশক

প্রবাসী কন্ঠ

ডিসেম্বর ২৭, ২০১৩