কানাডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে এ বছর ১লা জুলাই পালিত হলো কানাডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। কানাডার ১৫০তম জন্মউৎসবের মূল অনুষ্ঠানটি হয় রাজধানী অটোয়াতে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনের সামনে। ২৫ সহস্রাধিক লোকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন বৃটেনের প্রিন্স চার্লস, কানাডার গভর্নর জেনারেল ডেভিড জনস্টোন, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সহ মন্ত্রীপরিষদের সদস্যগণ এবং সরকারী ও বিরোধী দলীয় এমপিগণ। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী নারী পুরুষের ঢল নেমেছিল রাজধানী অটোয়াতে কানাডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে। উৎসবে যোগ দিতে অন্যান্য প্রভিন্স থেকেও এসেছিলেন অনেকে। অনেকের হাতে ছিল ম্যাপেল লিফ খচিত কানাডার লাল সাদা পতাকা। বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দের জোয়ারে ভেসে গিয়েছিল কানাডার পার্লামেন্ট চত্বর। একই অবস্থা ছিল কানাডার অন্যান্য প্রান্তেও।

আমরা জানি কানাডা একটি মাল্টি কালচারের দেশ। ডাইভারসিটি এই দেশের অন্যতম পলিসি। দেশটির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ডাইভার্সিফাইড এই পপুলেশনের অবদান অনস্বীকার্য। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ১লা জুলাই অটোয়াতে কানাডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে জনতার উদ্দেশে বলেছেন,  “আমরা কেয়ার করি না এখানে কে কোন দেশ থেকে আসলো, কার কি ধর্মবিশ্বাস এবং কাকে কে ভালবাসে। কানাডায় সবাইকে সাদরে গ্রহণ করে। সবাই এখানে সমাদৃত।

এই সমাদৃত হওয়ার কারণেই কানাডা ইমিগ্রেন্টদের জন্য একটি পছন্দের দেশ, একটি ভালবাসার দেশ। কার কি পরিচয়, কে কোন দেশ থেকে আসলো, কার কি ধর্ম বিশ্বাস, কে ধর্ম পালন করলো আর কে ধর্ম পালন করলো না, কার কি গায়ের বর্ণ এগুলো কোন গুরুত্ব বহন করে না কানাডায়।

আমরা জানি কানাডা বিশ্বের একটি খ্যাতিমান দেশ। বিশ্ব সেরা শিষ্টাচারের দেশ এটি, অন্যতম শান্তির দেশ কানাডা।

এরকম একটি দেশে থাকতে পেরে এখানকার প্রতিটি ইমিগ্রেন্টই গর্ববোধ করেন। স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার এক জরীপেও দেখা গেছে প্রায় শতভাগ অভিবাসীই তাদের মাতৃভূমির তুলনায় কানাডায় সুখে আছেন। মাতৃভূমি ত্যাগ করে আসলেও কানাডাকে নিজের দেশ হিসাবেই মনে করেন তারা। প্রায় শতভাগ কানাডিয়ানের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে ইমিগ্রেন্টদের প্রতি।

আমরা আরো জানি কানাডা বিশ্বের সেরা নিরাপদ দেশগুলোর একটি। বিশ্বে কানাডিয়ানরা সততা ও ন্যায়পরায়ণতার জন্য বিশেষভাবে স্বীকৃত। এখানে উচ্চশিক্ষিতের হার অনেক বেশী এবং কানাডা তার নাগরিকদেরকে সর্বোচ্চ মানের জীবন যাপন পদ্ধতি প্রদান করে থাকে।

এরকম একটি দেশের প্রতি প্রতিটি ইমিগ্রেন্টেরই কৃতজ্ঞতা থাকা উচিৎ শতভাগ। থাকা উচিৎ একাত্মতার শক্তিশালী অনুভূতি। আর সেটা আছেও। স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার গবেষণা পত্রে আমরা দেখেছি শতকরা ৯৩ ভাগ ইমিগ্রেন্টেরই কানাডার প্রতি খুবই শক্তিশালী অনুভূতি রয়েছে। এটা খুবই ইতিবাচক একটি দিক।

আজকে কানাডার এই ১৫০তম জন্মবার্ষিকী লগ্নে আমরা যারা ইমিগ্রেন্ট তাদেরকে নতুন করে উদ্দীপিত হতে হবে এই দেশটির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আমাদের ভূমিকাকে আরো জোড়ালো করার জন্য। কারণ, এটি আমাদেরও দেশ।

জুলাই ৮, ২০১৭