কানাডার ইমিগ্রেন্টদের দেখা হয় ভিন্ন চোখে

খুরশিদ আলম :

কানাডার ইমিগ্রেন্ট  বা দৃশ্যমান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেখা হয় ভিন্ন চোখে, তাঁদের প্রতি আচরণও করা হয় ভিন্নভাবে। অর্থাৎ শ্বেতাঙ্গ কানাডিয়ানদের প্রতি যে ভাবে আচরণ করা হয় বা তাঁদেরকে যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় সেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয় না দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদেরকে। এই দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের মধ্যে আছেন এশিয়ান, আফ্রিকান ও সাউথ আমেরিকান বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নগরিক বা ইমিগ্রেন্ট। এসোসিয়েশন ফর কানাডিয়ান স্টাডিজ এর পক্ষে দ্যা লেজার মার্কেটিং পুল কর্তৃক পরিচালিত এক জরীপে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছিল একবার। কিন্তু দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের প্রতি কেন এই আচরণ করা হয়? কেনই বা তাঁদেরকে দেখা হয় ভিন্ন চোখে? তাঁরা কি ভিন্ন জাতের বলে না কি গায়ের রং ভিন্ন বলে?

এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে দেখা যাক কানাডায় দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের বর্তমান অবস্থান কোথায় এবং ভবিষ্যতে তাঁদের অবস্থান কোথায় গিয়ে দাড়াবে।

২০০৬ সালের আদম সুমারী অনুযায়ী কানাডায় দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫.৩ মিলিয়নের মতো। শতকরা হিসেবে কানাডার মোট জনসংখ্যার ১৬.২ভাগ। ২০০১ সালে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৪ মিলিয়নের মতো। শতকরা হিসেবে ১৩.৪ভাগ। ১৯৯৬ সালে তা ছিল শতকরা ১১.২ ভাগ, ১৯৯১ ও ১৯৮১ সালে যথাক্রমে ৯.৪ ও ৪.৭ ভাগ। ২০০৬ সালের আদম সুমারীতে দেখা গেছে কানাডায় ২ শতেরও বেশী ভাষাভাষী সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে। কানাডার আদিবাসীরা এই  হিসেবের বাইরে। এখানকার বিভিন্ন  আদিবাসী জনগোষ্ঠিকে দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের কাতারে ফেলা হয় না।

স্ট্যাটিসটিকস কানাডার মতে ২০৩১ সালে দৃশ্যমান এই সংখ্যালঘুদের সংখ্যা বর্তমানের প্রায় ৫.৩ মিলিয়ন থেকে বেড়ে গিয়ে প্রায় ১৪.৪ মিলিয়নে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। আর এর বেশীর ভাগই হবে এশিয়ান ইমিগ্রেন্ট যাদের সংখ্যা শতকরা ৫৫ ভাগ হতে পারে। তবে এই সংখ্যা বৃদ্ধিটা হবে মূলত কানাডায় জন্ম নেয়া দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের মধ্য থেকে। ২০০৬ সালের হিসাব অনুযায়ী কানাডায় জন্ম নেয়া এই শিশুদের সংখ্যা দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের মধ্যে ছিল শতকরা ২৪ ভাগ। ২০৩১ সালে তা গিয়ে দাড়াবে শতকরা ৪৭ ভাগে।

আর ২০৩১ সালের দিকে দৃশ্যমান এই সংখ্যালঘুদের প্রায় সকলেই (৯৬%) বাস করবে মেট্রোপলিটান শহর এলাকায়। এদের মধ্যে শতকরা ৭১ ভাগ বাস করবে টরন্টো, ভ্যাস্কুভার ও  মনট্রিয়লে। ঐ সময় টরন্টোর মোট জনসংখ্যার শতকরা ২৪ ভাগ বা ২.১ মিলিয়ন লোক হবে এশিয়ান বংশোদ্ভুত দৃশ্যমান সংখ্যালঘু। ১৯৯১ সালে অন্টারিওতে দৃশ্যমান কালো সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ছিল অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চেয়ে বেশী। ২০৩১ সালে ভ্যাঙ্কুভারে এশিয়ার চাইনীজ বংশোদ্ভুত দৃশ্যমান সংখ্যালঘুরা হবে ইমিগ্রেন্টদের মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশী। তাঁদের সংখ্যা ৮০৯,০০০ এর উপরে হতে পারে যা ভ্যাঙ্কুভারের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২৩ ভাগ, ২০০৬ সালে যা ছিল শতকরা ১৮ ভাগ। মন্ট্রিয়লে দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের সংখ্যা হবে মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩১ ভাগ। সেখানে আরব বংশোদ্ভূত লোকের সংখ্যা গিয়ে দাড়াবে প্রায় ৩৮১,০০০ যা দৃশ্যমান কালো সংখ্যালঘুদের প্রায় সমান হবে।

স্ট্যাটিসটিকস কানাডা পরিচালিত জরীপে আরো দেখা গেছে ২০৩১ সাল নাগাদ কানাডায় খ্রীস্টান ধর্ম বহির্ভূত লোকের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হবে যার অর্ধেকই হবে মুসলমান। ২০০৬ সালে খ্রীস্টান ধর্ম বহির্ভূত লোকের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮ ভাগ। ২০৩১ সাল নাগাদ খ্রীস্টান ধর্মালম্বীদের সংখ্যা বর্তমানের শতকরা ৭৫ ভাগ থেকে কমে ৬৫ ভাগে দাড়াবে। অন্যদিকে যাঁরা  কোন ধর্মই অনুসরণ করেন না অর্থাৎ নাস্তিক তাঁদের সংখ্যা বর্তমানের শতকরা ১৭ ভাগ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২১ ভাগে দাঁড়াবে।

এতো গেল ২০৩১ সাল নাগাদ কানাডার দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কত হবে সে ব্যাপারে স্টাটিসটিকস কানাডার ভবিষ্যদ্বানী । কিন্তু এর পর কি হবে? অর্থাৎ ২০৫০ বা ২০৬০ অথবা আরো পরে? এ ব্যাপারে এখনো কেউ কোন জরীপ চালায়নি। তবে স্ট্যাটিসটিকস কানাডার বর্তমান জরীপ ও এর ভবিষ্যদ্বানীর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, আগামী ৫০ বা ৬০ বছরে বর্তমান দৃশ্যপটের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এখন যাঁরা দৃশ্যমান সংখ্যালঘু, তখন হয়তো তাঁরা আর এই পরিচয় বহন করবেন না। সেই সময় হয়তো তাঁদের প্রতি এখনকার যে দৃষ্টিভঙ্গি বা এখনকার যে আচরণ সেটি আর  থাকবে না। অর্থাৎ শ্বেতাঙ্গ কানাডিয়ানদের যে চোখে দেখা হয় বা তাঁদেরকে যে পরিমান গুরুত্ব  দেয়া হয় সেই পরিমান গুরুত্ব তখন সবাই পাবেন। বর্ণবাদের ব্যাপারটা অনেকাংশেই তখন লোপ পাবে। অবশ্য এটি নিছকই আশার কথা। তবে আশা করতে দোষ কি? আদি কালে বর্ণবাদের যে ভয়াবহতা ছিল তা থেকে আজকের পরি্িস্থতির উন্নতিতো হয়েছে বহুগুনে। তবে এই উন্নতিটা হয়েছে মূলত উন্নত দেশগুলোতেই। সংখ্যালঘুরা সোচ্চার থাকলে আগামীতে বর্ণবাদ পরিস্থিতির আরো উন্নতি ঘটবে।

তবে বর্ণবাদ পৃথিবী থেকে একেবারে দূর হয়ে যাবে এমনটি বোধ হয় আশা করা ঠিক হবে না। কারণ এটি শুধু যে সাদা কালো আর বাদামী মানুষ আছে বলেই হচ্ছে তা কিন্তু নয়। বর্ণবাদ আছে ধর্মীয় গোষ্ঠি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে, বর্ণবাদ আছে একই ধর্মের উচু-নীচু জাতের মধ্যে, বর্ণবাদ আছে একই দেশের এক এলাকার লোকজনদের প্রতি অন্য এলাকার লোকদের এমনকি একই পরিবারের লোকদের মধ্যেও। আর ধনী-গরীবের মধ্যে বর্ণবাদ সেতো কখনো বিলীন হবার নয়। শতকরা ৯৯ জন ধনী ব্যক্তিই দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে ঘৃণা বা অবজ্ঞার চোখে দেখেন। মজার ব্যাপার হলো, যাঁরা একসময় দরিদ্র ছিলেন, তাঁরাও যদি ভাগ্যগুনে বা অন্যকোন উপায়ে ধনী বনে যান তখন তাঁদের বর্ণবাদী চরিত্রও বদলে যায়। অর্থাৎ তাঁরাও দরিদ্রদেরকে ঘৃণা বা অবজ্ঞার চোখে দেখতে শুরু করেন। মানব জনমের এ এক ঘৃণ্যতম অন্ধকার দিক।

মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। কানাডায় দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ করা হয় ভিন্নভাবে, তাঁদেরকে শ্বেতাঙ্গদের মতো গুরত্ব দেয়া হয় না এই তথ্যটি এসোসিয়েশন ফর কানাডিয়ান স্টাডিজ এর পক্ষে দ্যা লেজার মার্কেটিং পুলের জরীপে তুলে ধরা হয়েছে মূলত এখানকার বর্ণবাদের চিত্রটি তুলে ধরার জন্যই। জরীপে দেখা গেছে কানাডার শতকরা ৬২ ভাগ লোক মনে করেন দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ করা হয় ভিন্নভাবে। অন্যদিকে শতকরা ৩২ ভাগ মনে করেন শ্বেতাঙ্গদের প্রতি যে রকম আচরণ করা হয়, দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের প্রতিও সেরকমই আচরণ করা হয়। তবে এ বিষয়ে কানাডার বিভিন্ন প্রভিন্সের লোকদের মত ভিন্ন। যেমন কুইবেকের শতকরা ৪০ ভাগ লোক মনে করেন শ্বেতাঙ্গদের প্রতি যে রকম আচরণ করা হয়, দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের প্রতিও সেরকমই আচরণ করা হয়। অন্যদিকে শতকরা ৫৫ ভাগ মনে করেন দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ করা হয় ভিন্নভাবে।

এসোসিয়েশন ফর কানাডিয়ান স্টাডিজ এর নির্বাহী পরিচালক জ্যাক জেডাব বলেন, আগের তুলনায় কানাডায় বর্ণবাদ বৃদ্ধি পায়নি। তবে প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে এখনো বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ফেডারেল সরকারের করনীয় আছে অনেক কিছু।

এদিকে রেসিয়াল প্রোফাইলিং বা বর্ণের ভিত্তিতে কাউকে চিহ্নিত করে তাঁর প্রতি আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক আলাদা আচরণ করার ব্যাপারে কানাডার নাগরিকদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মতবাদ। এসোসিয়েশন ফর কানাডিয়ান স্টাডিজ এর পক্ষে দ্যা লেজার মার্কেটিং পুল কর্তৃক পরিচালিত ঐ জরীপে আরো দেখা গেছে কানাডায় শতকরা ৪৯ ভাগ নাগরিক রেসিয়াল প্রোফাইলিং নিষিদ্ধ করার পক্ষে। অপর দিকে শতকরা ৩৯ ভাগ চান রেসিয়াল প্রোফাইলিং চলতে দেয়া উচিৎ। বিভিন্ন প্রভিন্সে আবার এই পক্ষে বিপক্ষের হারে রয়েছে ভিন্নতা। যেমন কুইবেকের শতকরা ৩০ ভাগ অধিবাসী মনে করেন নিরাপত্তার প্রয়োজনে রেসিয়াল প্রোফাইলিং এর প্রয়োজন রয়েছে। ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় এই হার শতকরা ৪৫ ভাগ, মেরিটাইমে শতকরা ৪৭ ভাগ, অন্টারিওতে শতকরা ৪৫ ভাগ, মেনিটোবা ও সাসকাচুয়ানে শতকরা ৫৭ ভাগ এবং আলবার্টাতে শতকরা ৭০ ভাগ।

এই রেসিয়াল প্রোফাইলিং এক অর্থে বর্ণবাদেরই নামান্তর। কারণ, কারো গাত্রবর্ণ দেখে সে অপরাধী না নির্দোষ তা আগে থেকেই আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক নির্ধারণ করাটা বর্ণবাদ ছাড়া আর কি হতে পারে? তবে বাস্তবতা হলো কানাডায় শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীদের তুলনায় কালো অধিবাসীদের মধ্যে অপরাধ প্রবনতা অনেক বেশী। বাদামী এশিয়দের মধ্যে অপরাধ প্রবনতা কালোদের চেয়ে অনেক কম। কানাডায় সবচেয়ে বেশী অপরাধ প্রবন হলো আদিবাসী বিভিন্ন গোষ্ঠি। স্ট্যাটিসটিসক কানাডার এক হিসেবে দেখা যায় প্রতি এক লাখ শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীর মধ্যে বিভিন্ন অপরাধের কারণে কারাবন্দির সংখ্যা ৪৩ জন। কিন্তু আদিবাসীদের মধ্যে এই সংখ্যা ১৮৫, কালো অধিবাসীদের মধ্যে ১৪৬, এশিয়ানদের মধ্যে ১৬ এবং অন্যান্যদের মধ্যে ১০০ জন। এই হিসাব ১৯৯৭ সালের।

কানাডায় অবশ্য রেসিয়াল প্রোফাইলিং নিয়ে তেমন একটা গবেষণা হয়না যেমনটা হয় মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রে। আর গবেষণা সামান্য পর্যায়ে হলেও তা সাধারণত প্রকাশ করা হয় না। ফলে রেসিয়াল প্রোফাইলিং এর উপর তেমন তথ্যও পাওয়া যায় না এখানে।

উপরের তথ্য থেকে এরকম ধারণা হওয়া স্বাভাবিক যে, অপরাধ দমনে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক রেসিয়াল প্রোফাইলিং যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে গাত্রবর্ণ এবং অপরাধের মধ্যে সম্পর্ক কি এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর মেলা ভার। যা পাওয়া যায় তাও পরষ্পর বিরোধী। কানাডিয়ান জার্নাল অব ক্রিমিনলজি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, এক পক্ষ মনে করেন অপরাধ আইনে সংখ্যালঘুরা বৈষম্যের শিকার হন। বিভিন্ন অপরাধের কারণে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় সংখ্যালঘু অন্যান্য অধিবাসীদের গ্রেফতার, বিচারের মুখোমুখি ও দন্ডিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। অন্য পক্ষের ভাষ্য হলো সংখ্যালঘুদের মধ্যে অপরাধপ্রবনতা বেশী। এই দ্বিতীয় মতের মধ্যেও আবার বিভক্তি আছে। এক পক্ষ বলছেন, সংখ্যালঘুদের মধ্যে অপরাধপ্রবনতা বেশী হওয়ার কারণ হলো তাঁদের হতাশা যেটি সৃষ্টি হয় অত্যাচার ও বর্ণ্য বৈষম্য থেকে। অপর পক্ষের মত হলো, সংখ্যালঘুদের মধ্যে অপরাধপ্রবনতা তাঁদের জিনের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। এ কারণে তাঁরা শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় অপরাধ বেশী করে থাকে। তবে এই দ্বিতীয় মতের পক্ষে অকাট্য বা শক্তিশালী কোন প্রামান্য দলিল পাওয়া  যায় না। এটি বর্ণবাদীদের উদ্ভট কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

পরিশেষে বলা যায়, রেসিয়াল প্রোফাইলিং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আপতদৃষ্টিতে অনেকটা উপকারী মনে হতে পারে। কিন্তু এর বিপদও আছে অনেক। যেমন, এ জাতীয় জরীপ তথ্য সঠিক নাও হতে পারে। অথবা জরীপে প্রাপ্ত তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন না করে তাতে বিকৃতি ঘটানো হতে পারে। কিংবা এ জাতীয় জরীপ তথ্য বর্ণবাদকে উষ্কে দিতে পারে অথবা বর্ণবাদীরা বর্ণবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এ তথ্যের অপব্যবহার করতে পারে নানাভাবে। আমরা দেখেছি কানাডায় এমনিতেই দৃশ্যমান সংখ্যালঘুদেরকে ভিন্নচোখে দেখা হয়, তাঁদের প্রতি আচরণও করা হয় ভিন্নভাবে। এই পরিস্থিতিতে রেসিয়াল প্রোফাইলিংকে যদি নিষিদ্ধ না করা হয় বা এর ব্যবহারকে যদি নিরুৎসাহিত না করা হয় তবে এর অপব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী এবং এতে করে বর্ণবাদ আরো জেকে বসতে পারে কানাডার সমাজ ব্যবস্থায়। নষ্ট হতে পারে মাল্টিকালচারাল ভাবমূর্তি যা কারোই কাম্য হতে পারে না। সুতরাং রেসিয়াল প্রোফাইলিং থাকার চেয়ে না থাকা এবং এটি ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

ডিসেম্বর ১৮, ২০১৩

খুরশিদ আলম, সম্পাদক ও প্রকাশক, প্রবাসী কন্ঠ